
রবিবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে এক প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে উঠল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চত্বর। ডিনামাইটের বিস্ফোরণে ধুলোয় মিশে গেল কেন্দ্রের দুটি পরিত্যক্ত চিমনি। একসময় যেখান থেকে ছয়টি চিমনি মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, সেখানে এখন দাঁড়িয়ে মাত্র চারটি।
চিমনি দুটির আয়ু ফুরিয়ে যাওয়ার পর, বিদ্যুৎ দপ্তরের নির্দেশে সেগুলিকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এজন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দল আনা হয়েছিল, যারা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে সেগুলি নামিয়ে দেয় মাটিতে। গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন এলাকা ঘিরে রাখা হয় সুরক্ষার ঘেরাটোপে।
১৯৮৪ সালে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংকট দূর করতে গড়ে ওঠে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২১০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইউনিট দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও, পরবর্তী বছরেই আরও পাঁচটি ইউনিট যুক্ত হয়। প্রতিটি ইউনিটের সঙ্গে স্থাপিত হয় আলাদা চিমনি, যা বহু বছর ধরে এলাকার পরিচিত ল্যান্ডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রাংশের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, সেগুলির সঙ্গে থাকা দুটি চিমনি আর ব্যবহার উপযোগী ছিল না। অবশেষে সেগুলিকে নিরাপদভাবে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দীর্ঘকাল ধরে আকাশছোঁয়া চিমনি দুটি শুধু কারিগরি দিক থেকেই নয়, আবেগের স্থানও দখল করে নিয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে। তাই ধ্বংসের মুহূর্তে অনেকেই স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন। তবে আধুনিকীকরণ ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।