চলে গেলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ফকির মহম্মদ, জানাযায় খাটিয়া নিয়ে গেলেন বিধায়ক পরেশ রামদাস

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

CYMERA_20210805_132916

ক্যানিং:  চলে গেলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ ফকির মহম্মদ সরদার। বুধবার ভোরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে দূরদূরান্ত থেকে মুসলিমের পাশাপাশি ভিন ধর্মী মানুষের ঢল নেমে যায় তাঁর বাড়িতে। মৃতদেহ দেখতে আসেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রামদাস। ফকির মোহাম্মদ সরদারের মৃতদেহের খাটিয়া ধরে জানাযার স্থানে নিয়ে যান তিনি। জানাজা সম্পন্ন হয় দুপুর ২টোয়। কবরস্থ করার পর মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে সাথে বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর কবরে মাটি দেন। মৃত্যুকালে ফকির মহম্মদ সরদার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও অসংখ্য আত্মীয় পরিজন এবং বহু শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গিয়েছেন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ফকির মহম্মদ সরদার । ষাটের দশকে ক্যানিং এর বিস্তীর্ণ এলাকায় বামপন্থী আন্দোলন গড়ে তুলতে আত্মনিয়োগ করেন। প্রথমে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টি ও পরে সিপিএমের সক্রিয় নেতৃত্বের ফলে কৃষক আন্দোলন ও ভূমিসংস্কারের কাজ তরান্বিত হয়। তিনি এলাকায় প্রবাদপ্রতিম নেতৃত্বের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। সমাজে সর্বসাধারণের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন পরিশ্রমী অনাড়ম্বর ও বিচক্ষণ নেতা হিসেবে সম্মানিত।

বাঁশড়া অঞ্চল প্রধান হিসেবে তিনি এলাকায় সব সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। বাঁশড়া অঞ্চলের মধ্যে গাজী বাবা ও তাঁর গ্রাম মনসাপুকুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এক অনন্য নজির হিসেবে পরিচিত। এই ধারাকে আমৃত্যু ফকির মহম্মদ সরদার বহন করেছেন । তাঁর মৃত্যুতে এলাকার মানুষ একজন গরিবের অভিভাবককে হারিয়েছেন বলে জানান বাপ্পা মিত্র, তাপস অধিকারী, সাগরিকা হালদাররা।এই অসাম্প্রদায়িক মানুষের চলে যাওয়ায় এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে ।

অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে শোক ও সম্মান জানাতে এবং তাঁর নশ্বর মরদেহ দর্শনে মানুষের ঢল নামে। ৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় বাঁশড়া অঞ্চলে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিলে তিনি ও পাশের নারায়ণপুর অঞ্চল প্রধান মাদার আলি মোল্লার সঙ্গে এলাকায় শান্তি ও সহাবস্থান অটুট রাখতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

 

ফকির মোহাম্মদ সরদারের নেতৃত্বে জোরদার জমিদারদের কাছ থেকে ১৩০০ বিঘা সম্পত্তি উদ্ধার করে কয়েক শো ভূমিহীন মানুষের বসবাসের জন্য সুভাষপল্লী ,নবপল্লী ,হঠাৎ কলোনি, ফকির পল্লী এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাসের জন্য পল্লী গড়ে তোলা হয়। ফকির মোহাম্মদ সরদার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং সাব ডিভিশনের ঘুটিয়ারি শরীফ মনসা পুকুরের বাসিন্দা। বর্তমানে ওই অঞ্চলের উপ প্রধান পদে রয়েছেন তাঁর ছেলে আবুল কাসেম সর্দার।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর