মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জর্ডান ও মিসরে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি গাজা অঞ্চলকে “সম্পূর্ণ পরিষ্কার” করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া অস্থায়ী বা স্থায়ী উভয়ই হতে পারে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে অনেকেই জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মিসর ও জর্ডানের নেতারা এই প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিষয়ে যা বলা হচ্ছে, তা কখনোই সহ্য করা হবে না বা অনুমোদিত হবে না, কারণ এটি মিসরের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলবে।” জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহও ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের যে কোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছেন।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আমরা আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালে সংঘটিত বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।” তিনি ফিলিস্তিনি ভূমির ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
এদিকে, ইসরায়েলের কট্টরপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সার্বভৌমত্ব প্রয়োগের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া, ইসরায়েলের কিছু রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে জমি বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই জমি মূলত আমেরিকার কট্টরপন্থী ইহুদিদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাব এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ জমি বিক্রির ঘটনাগুলো একসঙ্গে বিবেচনা করলে, এটি ইসরায়েলের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ বলে মনে হয়, যা ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনকে উৎসাহিত করছে।
তবে, এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্য থেকেও প্রতিবাদ উঠেছে। অনেক ইহুদি সংগঠন এবং ব্যক্তি এই অবৈধ জমি বিক্রি এবং ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই ইস্যুগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।