পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি ডঃ মোঃ মিনারুল শেখ, তার এক বিবৃতিতে বলেন যে, “শিতলকুচিতে সাধারণ মুসলিমদের যেভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে, কারণ এটা সাধারণ হত্যা নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও অন্যান্য তথ্য থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে, এটা পরিকল্পিত হত্যা। এটাকে রাজনৈতিক চাদরে আবদ্ধ করে অন্ধকারে রেখে দেশের গণতন্ত্র ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া রক্ষা করা যাবে না”। তিনি আরো বলেন যে, “নিহতরা সকলেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গুলি করল আর সেইগুলি অনেক ভীড়ের মধ্যে চারজন মুসলিমেরই বুক চিরে চলে গেল, অন্য কোন ব্যক্তিকে স্পর্শ করল না”। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারাও ভিডিও বার্তাতে বলেছেন যে, “আরএসএস-এর লোকেই গুলি করেছে”। ভীড়ের মধ্যে ঠিক চারজন মুসলিমের প্রাণ চলে চাওয়া এবং আক্রান্তদের ভিডিওবার্তা থেকে এই সন্দেহ দানা বাঁধা খুবই স্বাভাবিক যে এটা কি পরিকল্পিত হত্যা?না কি অবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে। তবে সর্বসাধারণ ও আক্রান্তদের দেওয়া বিবৃতিতে স্পষ্ট হচ্ছে যে, এটা পরিকল্পিত হত্যা। আসলে এই হত্যার পিছনে কার বা কাদের হাত আছে সেটা দেশের স্বার্থে স্পষ্ট হওয়া আবশ্যক এবং এর জন্য ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।
যারা নিহত হয়েছেন তাদেরকে ‘তৃণমূল কর্মী’ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ- এই পরিচয়টা আড়াল করে বিষয়টাকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তারা কোন দলের সমর্থক বা কর্মী সেটা বড় কথা নয়, বড় বিষয় হল তারা দেশের মানুষ। ভালো শাসন ব্যবস্থা রক্ষা করার জন্য তারা নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ গ্ৰহণ করেছিলেন এবং সেখানে তারা প্রাণ হারিয়েছেন। নির্বাচনের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা গণতান্ত্রিক দেশের জন্য ভালো লক্ষণ বহন করে না। যারা সাধারণ মানুষের ভোটে নেতা হয়ে থাকেন তাদের এটা মৌলিক দায়িত্ব যে, এই ধরনের হত্যার রাস্তা বন্ধ করার জন্য সমবেতভাবে কাজ করবেন। তারা যে সাধারণ মানুষকে ভালো বাসেন সেটা তাদেরকেই প্ৰমাণ করতে হবে। এই ধরণের হত্যার সময়ে তারা যদি ভোট ব্যাংকের কথা ভেবে নীরব থাকেন তাহলে জানতে হবে যে, তারা নিজের স্বার্থে রাজনীতি করেন। জনগনের জন্য কোন ভালোবাসা তাদের অন্তরে নেই।
তিনি মানবাধিকার কর্মী, সংগঠন, সুশীল সমাজ সকলের নিকট আবেদন করেন যে দেশের বর্তমান যে অবস্থা তা থেকে স্পষ্ট যে শুধু সরকারের উপর সমস্ত দায় চাপিয়ে দিয়ে না,ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, আর না সম্ভব ন্যায় পাওয়া। ফলে সকল দেশবাসীর দায়িত্ব হল এই ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠানো।
তিনি দেশের রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নিকট দাবি করেন যে, “ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে এবং প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে সরকারি চাকরি সহ ৫০ লক্ষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে”।