করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এনবিটিভি, ৬ এপ্রিল, ২০২০

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত রবিবার লিবিয়ার বিদ্রোহী সরকারের সাবেক প্রধান মাহমুদ জিবরিল মারা গেছেন।মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
লিবিয়ায় করোনায় এটি দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনা। এছাড়া দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ জন।

মাহমুদ জিবরিল মিসরের রাজধানী কায়রোর একটি হাসাপতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত জিবরিল ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ইকোনমিক্স এবং পলিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক মাহমুদ জিবরিল ছিলেন লিবিয়ার সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। ২০১১ সালে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে মাহমুদ জিবরিলের বিদ্রোহী সরকার। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মাহমুদ জিবরীল ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরই প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধ শেষ হলেই তিনি পদত্যাগ করবেন। তিনি কথা রেখেছিলেন। ২০ অক্টোবর গাদ্দাফির মৃত্যুের তিন দিন পর, ২৩ অক্টোবর তিনি পদত্যাগ করেন।

এরপর ২০১২ সালে জিবরিল ন্যাশনাল ফোর্সেস অ্যালায়েন্স গঠন করেন।

ওই অ্যালায়েন্সের সেক্রেটারি খালেদ-আল মিরিমি রোববার জিবরিলের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২১ মার্চ তিনি কায়রোর গানজৌরি স্পেশালাইজড হাসপতালে ভর্তি হন। এর তিনদিন পর তার দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।

হাসপাতালের পরিচালক হিশাম ওয়াগদি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‌গত পড়শুদিন তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেলেও তারপর আবার তা খারাপ হতে থাকে। রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

গাদ্দাফির সরকারের শেষ দিনগুলোতে জিবরিল ছিলেন তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। কিন্তু ২০১১ সালে সরকার বিরোধী বিদ্রোহে যোগ দেন তিনি। গাদ্দাফিকে হত্যার পর ন্যাটো জোটের সমর্থনে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় তার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাহমুদ জিবরিল। দেশটিতে ২০১২ সালে চার দশকের মধ্যে প্রথম অবাধ নির্বাচন না হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

নির্বাচনে জিবরিলের দল জয় পেলেও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পাওয়ায় তারা ক্ষমতায় যেতে ব্যর্থ হয়। ফলে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান জিবরিল-ও। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হয় সংঘাত ও সহিংসতা যা বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে। ফলে লিবিয়া ছেড়ে বিদেশে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন জিবরিল।

Latest articles

Related articles