এনভিটিভি,ওয়েব ডেস্ক: তবরেজ আনসারির গণপিটুনি মামলায় ১০ জন কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। বুধবার সেই মামলার রায় দিল কোর্ট। অভিযুক্তদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁদের। একই সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
২৭ জুন ওই ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তখন সরকারি আইনজীবী অশোককুমার রাই জানিয়েছিলেন, ৫ জুলাই সাজা ঘোষণা হবে। বুধবার সেই সাজাই ঘোষণা করা হল।
রাই জানিয়েছেন, বিচার চলাকালীন এক অভিযুক্ত মারা গিয়েছেন। বাকি দু’জনকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করা হয়েছে।
আদালতের রায় ঘোষণার পর দোষী ভিম সিংহ মুণ্ডা, কমল মাহাতো, মদন নায়াক, অতুল মাহালি, সুনামো প্রধান, বিক্রম মণ্ডল, চামু নায়াক, প্রেমচাঁদ মাহালি, মহেশ মাহালিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত প্রকাশ মণ্ডল ওরফে পাপ্পু মণ্ডল আগেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন।
ঝাড়খণ্ডে ১৯ জুন ২০১৯ সালে ২৪ বছর বয়সি তাবরেজ আনসারিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ তুলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পিটিয়েছিল। এ ঘটনার কয়েক দিন পর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।
প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় পুলিশ খুনের অভিযোগ না নেয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছিল। পরে তারা একটি সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে।
সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া এক ভিডিওতে তাবরেজ আনসারিকে পিটুনি থেকে বাঁচার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত আনসারিকে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে, উপস্থিত জনতা তাকে মার ছিলেন এবং তার মুখ দিয়ে রক্ত ও চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ছিল।
সে সময় আনসারিকে হিন্দু দেবতাদের গুণগান গাইতেও বাধ্য করা হয়, যা দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় তোলে।
আনসারি পরে জানায়, তাকে সারা রাত ধরেই মারধর করা হয় এবং পরদিন তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার তিন দিন পর ২২ জুন তার বমি ও বুকে ব্যথার কারণে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে সে সময় অভিযোগ করা হয়, আহত হওয়ার পরেও পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য যথাযথ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি আটকের পর তার সঙ্গে পরিবারকে দেখাও করতে দেয়া হয়নি। যদিও রাজ্য পুলিশ গাফিলতির কথা অস্বীকার করেছে।