ভারতের ওষুধ শিল্পে গুণগত মান নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে, যখন কেন্দ্রীয় ওষুধ মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (CDSCO) জানিয়েছে যে 2025 সালের জানুয়ারি মাসে 145টি ওষুধ ও ফর্মুলেশন মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল নামে একটি সংস্থার উৎপাদিত রিংগার্স ল্যাকটেটের 16টি ব্যাচও ব্যর্থ হয়েছে, ফলে কোম্পানিটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এই ঘটনা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদসংকেত এবং এটি ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা আবারও মনে করিয়ে দেয়।
CDSCO-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জানুয়ারি 2025-এ পরীক্ষিত ওষুধের মধ্যে 145টি ‘নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ (NSQ) হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে 52টি কেন্দ্রীয় ল্যাবে এবং 93টি রাজ্যের ল্যাবে ব্যর্থ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের রিংগার্স ল্যাকটেট, যা শরীরে তরল ও ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহে ব্যবহৃত হয়, তার 16টি ব্যাচ ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই ঘটনা ওষুধ উৎপাদনের মান নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলেছে।

ব্যর্থ ওষুধের তালিকা
মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে:
টেলমিসার্টান: উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায়।
ওন্ডানসেট্রন: বমি বন্ধে।
ভিটামিন বি12: পুষ্টির ঘাটতি পূরণে।
প্যারাসিটামল: জ্বর ও ব্যথা নিরাময়ে।
অ্যান্টিবায়োটিক: সংক্রমণ প্রতিরোধে।
লেভোসেট্রিজিন: অ্যালার্জির জন্য।
প্যান্টোপ্রাজল: আলসার নিরাময়ে।
এই ওষুধগুলি সাধারণ জ্বর থেকে শুরু করে হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ এবং আলসারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, যা এই ব্যর্থতার বিস্তৃত প্রভাবকে তুলে ধরে।
পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের 16টি ব্যাচ রিংগার্স ল্যাকটেট ব্যর্থ হওয়া রাজ্যের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এই তরল ওষুধটি জরুরি চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে হাইড্রেশন ও হৃদরোগের ক্ষেত্রে। কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল জনস্বাস্থ্য রক্ষা করলেও স্থানীয় উৎপাদন মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
CDSCO ব্যর্থ ব্যাচগুলি বাজার থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে এবং নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের লাইসেন্স বাতিল ছাড়াও অন্যান্য কোম্পানির উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই ব্যর্থতা রোগীদের চিকিৎসায় বাধা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস এবং এমনকি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ভারত বৈশ্বিক জেনেরিক ওষুধ বাজারের ২০% দখল করে আছে। এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকায় রপ্তানির উপর দেশগুলি বাড়তি নজরদারি চালানো হতে পারে।