Tuesday, April 22, 2025
35 C
Kolkata

২০ লক্ষ টাকার লোভে তিন নিরীহ কাশ্মিরীকে ভুয়া এনকাউন্টারে হত্যা করে ভারতীয় সেনার এক ক্যাপ্টেন, চার্জশিটে বলল পুলিশ

নিউজ ডেস্ক : যেকোনো দেশের সেনাবাহিনীকে বলা হয় দেশের সর্বময় ভূখণ্ডের রক্ষক, জনগণের জীবন এবং সম্পত্তির রক্ষক। দেশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর অবদান নিয়ে রাজনীতি এ দেশের নতুন বিষয় নয়। কথায় কথায় দেশের সেনাবাহিনীর উদাহরণ দিয়ে বিপক্ষকে বিপদে ফেলার প্রচেষ্টা ক্ষমতাসীন বিজেপির দেশপ্রেম দেখানোর প্রধান কৌশল। কিন্তু মাত্র ২০ লক্ষ টাকার লোভে ৩ নিরীহ নিষ্পাপ কাশ্মীরি যুবককে হত্যা করল সেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। ঘটননার নির্মমতা বিস্মিত করে সবাইকে। এই অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন তার ষড়যন্ত্রে সাহায্য করতে বাধ্য করেছিল ২ বেসামরিক কাশ্মীরি যুবককে। গত বছর জুলাই মাসে সোপিয়ানে তিন নিষ্পাপ কাশ্মীরি যুবককে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করে ভারতীয় সেনা। তাদেরকে সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে ওই ক্যাপ্টেনের কুকীর্তি।

অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ভূপপিন্দর সিং বর্তমানে সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে পারেন।

মামলাটি ২০২০ সালের জুলাইয়ের আমসিপুরায় সংঘর্ষের সাথে সম্পর্কিত, যেখানে রাজৌরি জেলার তিন যুবক – ইমতিয়াজ আহমেদ, আবরার আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইব্রারকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে হত্যা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের সন্ত্রাসবাদী লেবেল দেয়।

ওই জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জমা দেওয়া চার্জশিটে এই মামলায় তাবিশ নাজির ও বিলাল আহমেদ লোন নামে দুই বেসামরিক নাগরিকের ভূমিকার বিবরণও দেওয়া হয়েছে।

লোন পরবর্তীতে ঘটনার একজন সাক্ষী হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তার স্বীকারোক্তির জবানবন্দি রেকর্ড করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই তিন যুবক সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত নয় বলে খবর প্রকাশ এবং তাদের পরিবারের বারং বার দাবির ফলে চাপে পড়ে সেনাবাহিনীর একটি আদালত তদন্তের আদেশ দেয়, যা সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে শেষ হয়। তদন্তে দেখা গেছে যে সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইন (এএফএসপিএ) এর অধীনে সেনারা নিজেদের প্রাপ্ত ক্ষমতাগুলির অপব্যাবহার করেছে।

 

আমশিপুরায় নিহত তিন যুবকের পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। তাদের লাশ অক্টোবর মাসে বড়মুলায় তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

কৌশলগতভাবে অবস্থিত এক্সভি কর্পস-এর কমান্ডের জেনারেল অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিএস রাজু বলেছিলেন, ইতিমধ্যে প্রমাণের প্রাথমিক পাঠ চুকেছে এবং সেনাবাহিনী আইন অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এই বিষয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাপ্টেন এএফএসপিএ ১৯৯০ এর অধীনে অর্পিত ক্ষমতা লঙ্ঘনের জন্য এবং সুপ্রিম কোর্টের অনুমদিত নিয়ম অনুসরণ না করার জন্য কোর্ট মার্শাল কার্যক্রমের মুখোমুখি হতে পারেন।

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল তাদের জমা দেওয়া চার্জশিটে তদন্তের প্রমাণ হিসেবে ৭৫ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং মামলায় জড়িত আসামিদের কল ডেটা রেকর্ডসহ প্রযুক্তিগত প্রমাণও সরবরাহ করা হয়েছে।

চার্জশিটে উল্লেখিত অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর চার সদস্যের নাম- সুবেদার গারু রাম, ল্যান্স নায়েক রবি কুমার, সিপাই অশ্বিনী কুমার এবং যুগেশ – যারা ঘটনার সময় ক্যাপ্টেন সিংহের দলে ছিলেন।

Hot this week

দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি , দিলীপ ঘোষের নিশারায় শিক্ষা মন্ত্রী

রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ফের প্রশ্ন তুললেন বিজেপি...

উত্তরপ্রদেশে ওয়াকফ বিল বিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গ্রেপ্তার ৫০, জামিনে চাওয়া হল ২ লাখ টাকা জরিমানা

১৮ এপ্রিল, উত্তরপ্রদেশের বাগপথ জেলার বিলাসপুর গ্রামে স্থানীয় মসজিদের...

আইপিএস নুরুল হুদার পদত্যাগ, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে রাজনীতিতে প্রবেশ

আইপিএস অফিসার নুরুল হুদা ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে...

Topics

দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি , দিলীপ ঘোষের নিশারায় শিক্ষা মন্ত্রী

রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ফের প্রশ্ন তুললেন বিজেপি...

আইপিএস নুরুল হুদার পদত্যাগ, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে রাজনীতিতে প্রবেশ

আইপিএস অফিসার নুরুল হুদা ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে...

হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা…! ...

হঠাৎ করে বুকে ব্যথা হওয়ায় তৎকাল কমান্ড হাসপাতাল ভর্তি...

অবশেষে আইনি মতামত নিয়ে রাজ্যকে যোগ্য অযোগ্য তালিকা পাঠাচ্ছে এসএসসি

ফের পথে নামলেন চাকরি হারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মানববন্ধন করে এসএসসি...

Related Articles

Popular Categories