নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বর্তমানে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মধ্যে সবথেকে বেশি আলোচিত এবং বিতর্কিত রাজনৈতিক বিষয়। এটির ওপরেই অনেকটা নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে কৈলাশ বিজয় বর্গী, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী থেকে দিলীপ ঘোষ সমস্ত বিজেপি নেতারা এই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার আক্রমণ করেছেন। তাদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ কারীদেরকে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির কারণে অবৈধভাবে এদেশে থাকার অধিকার দান করেছেন। কিন্তু এবার খোদ বিজেপি নেতাকেই দেখা গেল অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে এদেশে সমস্ত নথি জাল বানিয়ে বসবাস করছেন এক দশক ধরে। তার নাম রুবেল হোসেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মুম্বাই পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি। তার কাছে ভোটার আইডি কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড সহ একজন ভারতীয় নাগরিক হিসাবে যা কিছু থাকা প্রয়োজন সব কিছুই রয়েছে। তার নথি পরীক্ষা করে রীতিমত হতভম্ব মুম্বাই পুলিশের কর্মকর্তারা। কিভাবে তিনি বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে এই সমস্ত নথিগুলি ভুয়া প্রমান দেখিয়ে তৈরি করলেন তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।
মু্ম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার মালপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতে নিজের আদি বাড়ি রয়েছে, এই পরিচয় দিয়ে নথি তৈরি করেছিলেন রুবেল। সেখানকার এক স্কুলের মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট জমা করেছিলেন। সেই ঠিকানার তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ে। দেখা যায়, মালপোতা গ্রামে রুবেল নামে কেউ থাকতেন না। এমনকী, স্কুলের সার্টিফিকেটটিও সম্পূর্ণ ভুয়ো। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপিকে তুলোধোনা করেছে বিরোধীরা।
দীর্ঘদিন বিজেপির নেতা হিসাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন তিনি। বিজেপির নেতারা কিভাবে বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞ থাকতে পারেন সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। তিনি বলেছেন, অমিত শাহ নিজের দলের নেতাদের ব্যাপারে সঠিক খোঁজ খবর না নিয়ে অন্য দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ব্যাপারে ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য কোচবিহারের জনসভা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জয় লাভ করলে বাংলাদেশ থেকে কোন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তো দূরের কথা কোন পাখি ও বর্ডার পার করে পারে আসতে পারবে না। তবে আজকের ঘটনায় যে বঙ্গ বিজেপি রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা যেতে পারে। কিভাবে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টিকে সামাল দেয় এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এটা থেকে কতটা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারে সেটাই এখন দেখার।