নন্দীগ্রামে মহারণ : মমতা – শুভেন্দু – আইএসএফ

নিউজ ডেস্ক : যে নন্দীগ্রাম থেকেই তৃনমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগ্রযাত্রার সূচনা হয়েছিল সেই নন্দীগ্রামে আবার এই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীপদের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে ১১ ই মার্চ নন্দীগ্রামে নিজের মনোনয়নপত্র মহকুমা শাসকের দপ্তরে জমা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার বিজেপি সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই নন্দীগ্রাম এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শুভেন্দু অধিকারীর যে জনপ্রিয়তা তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন ছিল সেটাকে কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। গতকাল রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারী যে নন্দীগ্রামের বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হতে চলেছে সে ব্যাপারে আভাস দেন। অন্যদিকে বাম কংগ্রেস এবং আইএসএফ এর মধ্যকার জোটের তরফ থেকে নন্দীগ্রামে দেওয়া হতে পারে আইএসএফ এর প্রার্থী।

বিধানসভা নির্বাচনে এই নন্দীগ্রাম থেকে বিধায়ক হিসেবে জিতে রাজ্য মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিছু দিন আগে তিনি মন্ত্রীত্ব এবং বিধায়ক পদ ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছেন। মমতা যে দিন তেখালি মাঠের জনসভা থেকে নন্দীগ্রামকে ‘মেজো বোন’ আখ্যা দিয়ে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেন, তার পরেই শুভেন্দু হুমকি দিয়েছিলেন ‘নন্দীগ্রামে মাননীয়াকে আধ লাখ ভোটে হারাব’। শুধু তাই নয়, ভবানীপুরকে ‘বড় বোন’ আখ্যা দিয়ে মমতা বলেছিলেন তিনি দু’জায়গা থেকেই দাঁড়াতে পারেন। শুভেন্দু এর পাল্টায় মমতাকে ‘শুধু নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে দাঁড়ান’ বলে হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি ওই বিজেপি নেতা সংখ্যালঘু ভোটের উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘‘৬২ হাজার ভোটের ভরসায় প্রার্থী হতে চাইছেন মাননীয়। বাকি সব ভোট আমরা পাব।’’

তবে বিজেপির সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি এবং আই এস এফ এর বিপরীত দিকে সংখ্যালঘু দলিত আদিবাসীদের সাহায্যে ভোট ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা সব দিক থেকে বিচার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে প্রত্যাশা মতো ফল করতে গেলে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি হাতিয়ার করে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে বিজেপির জন্য নন্দীগ্রাম এর লড়াই যে আদৌ সহজ হবে না তা ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের সঙ্গে ভবানীপুরে ও লড়াই করতে চলেছেন বলে জানা গেছে। উভয় ক্ষেত্রেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি এবং উন্নয়নের খতিয়ানকে ব্যবহার করে তরী পার হতে চাইবে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারী এবং আই এস এফ এর মধ্যে কার মহারণে কোন দল শেষ হাসি হাসে সেটাই এখন দেখার।

Latest articles

Related articles