নিউজ ডেস্ক : জেনারেল কাস্টের ছেলে মেয়েদের বহুদিনের দাবি সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জন্য। স্বাভাবিকভাবেই চাকরি বা শিক্ষা ক্ষেত্রে তুলনামূলক অনেক যোগ্য প্রার্থী বাদ পড়ে যান শুধুমাত্র জেনারেল কাস্টের হওয়ার জন্য। আবার তুলনামূলক অনেক কম মেধার প্রার্থী সুযোগ পান তারা সংরক্ষণের আওতায় থাকার জন্য। এবার সেই কথাই বলল সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি সংরক্ষণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে, স্বাধীনতার ৭০ বছর পার হলেও কি এই অনগ্রসর শ্রেনিগুলোর এতদিনের সংরক্ষণের কোনো সুবিধা হয়নি? এত বছরেও কি এদের কোনো উন্নতি হয়নি? তাহলে এখনও কেন প্রয়োজন সংরক্ষণ? আর কতদিন চলবে এমন সংরক্ষণ? কতদিন মেধার ওপর সংরক্ষণ গুরুত্ব পাবে? প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চলার কোনো অর্থ নেই। চাকরির ক্ষেত্রে মেধাই শেষ কথা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট।
মহারাষ্ট্রে ১৯৩১ সালে পাশ হওয়া সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি বিলের প্রস্তাব ছিল, পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর শ্রেণির সদস্যদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ রাখতে হবে। এই প্রস্তাবকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। তাতে বিচারপতিরা জানান যে এই ১৬ শতাংশ সংরক্ষণে সায় দিলে নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষণের যে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ ৫০ শতাংশ, তা পেরিয়ে যাবে। শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়ে অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতাগি বলেন, ”১৯৩১ সালে পাশ হওয়া বিলে এই প্রস্তাব ছিল। তবে তা এখন পুনর্বিবেচনা করা উচিত।” তাঁর আরও বক্তব্য, শিক্ষা বা চাকরিতে সংরক্ষণের বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। সংরক্ষণ প্রয়োজন কি না অথবা কতটা সংরক্ষণ দরকার, তা ঠিক করবে রাজ্য সরকারই।
তাঁর এই যুক্তির পর বিচারপতিরা আরও প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও কি কোনও শ্রেণিরই কোনও উন্নতি হয়নি? তাহলে তাদের জন্য এখনও সংরক্ষণ কেন প্রয়োজন? এর জবাবে রোহতগি আবার জানান যে মহারাষ্ট্রে এখনও ৩০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে রয়েছেন। অনাহারে মৃত্যুহারও বেশি। তাই এক্ষেত্রে সংরক্ষণের কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিৎ বলে মতপ্রকাশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলাটির শুনানি চলছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। কিন্তু শিক্ষা ও চাকরি অর্থাৎ যেখানে মেধাই অগ্রগণ্য হওয়া উচিৎ, সেখানে কেন সংরক্ষণের বাঁধে আটকে রাখা হচ্ছে? এবার শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল মামলাকারীদের।