নিউজ ডেস্ক : বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। সবার সামনে দিনের আলোতেই হয়েছিল কিন্তু অজানা কোনো কারণে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা সব কিছু দেখেও খুঁজে পায়নি কোনো দোষীকে। তাই বাবরি ধ্বংসযজ্ঞে অভিযুক্ত গেরুয়া সন্ত্রাসীরা সাজা পাওয়ার পরিবর্তে আজ পাচ্ছে গেরুয়া বাহিনীর নায়ক হওয়ার সৌভাগ্য। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান ভিত্তি বিচার ব্যবস্থা বর্তমানে আগের মতো আর সাধারণের বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দুতে নেই। এবার ইশরাত জাহানের ভুয়া এনকাউন্টার মামলায়ও বিচার ব্যবস্থার ভূমিকা নিয়ে উঠে গেল হাজারো প্রশ্ন। সিবিআই কোর্টের বুধবারের দেওয়া রায় খালাস করে দেয় ৩ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কে। গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন পুলিশ অফিসার কে নির্দোষ বলে তাদেরকে বেকসুর খালাস দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। অর্থাৎ আদালতের রায়ে এটাই বলতে চাই যে ১৯ বছরের ইসরাত জাহান আদতে সন্ত্রাসবাদি ছিলেন! তাই অনেকেই বাবরি মসজিদের বিচারের সঙ্গে তুলনা করছেন এই মামলার বিচারের ও। বিচার ব্যবস্থা কেমন ছিল সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ইশরাত জাহানের মা বলেছেন, শুরু থেকেই এই মামলায় বিচার এক বিশেষ পক্ষকে প্রাধান্য দিয়ে চালানো হয়েছে।
মোদির রাজ্য গুজরাটের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার চায় না এই ৩ অফিসারের বিরুদ্ধে আর মামলা চালিয়ে যেতে। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ৩ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার জি এল সংঘাল, তরুণ ব্যারট এবং আনজু চৌধুরীকে গতকাল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে মামলা থেকে। “৩ কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক নিজেদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করেছিল,” গত বছরের অক্টোবর মাসে দেওয়া রায়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত এমনই মন্তব্য করেছিল।
উল্লেখ্য ১৫ জুন ২০০৪ সালে, ১৯ বছরের ইসরাত জাহান এবং জাভেদ শাইখ ওরফে প্রণেশ পিল্লাই, আমজাদালি আকবরলি রানা ও জিশান জোহরদের ভুয়া এনকাউন্টার করে হত্যা করে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদির অধীনস্থ পুলিশ। মোদির প্রশাসন এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অপারেশন হিসাবে চালানোর চেষ্টা করলেও তৎকালীন হাইকোর্ট নিযুক্ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ১ বিশেষ তদন্ত কমিটি দীর্ঘ তদন্তের পর তাদের মোদি প্রশাসনের মুখোশ উন্মোচন করে দেয়। কমিটি বলে, এনকাউন্টার টি একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে সাজানো একটি হত্যাকাণ্ড ছিল। এর পর মামলার তদন্ত যায় সিবিআই এর হাতে। কিন্তু তারপর থেকেই গুজরাটের হিন্দুত্ববাদী সরকার এই মামলার সব দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে আছে আর বর্তমানে সিবিআই এক বিশেষ পক্ষের দিকে ঘেঁষে যে রায় দেবে তা আদৌ অপ্রত্যাশিত নয় বলে মনে করেন ইশরাত জাহান মা।