নিউজ ডেস্ক : বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হারের পরও আবার সেই সাম্প্রদায়িকতায় ভরসা করতে চায় বিজেপি নেতৃত্ব। এই সাম্প্রদায়িকতা এবং হিন্দুত্ববাদকে পুঁজি করেই তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ভোটে সাফল্য পেতে। কিন্তু সম্প্রীতির বাংলায় সাম্প্রদায়িকতা এবং রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে চরম ভাবে। কিন্তু এখন কেন্দ্রে মোদি সরকারের নেই দেখানোর মতো কোনো সাফল্য। আছে শুধু ব্যর্থতা আর সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসনের সহায়ক নীতি। তাই সেই পুরনো মন্ত্রেই ভরসা গেরুয়া শিবিরের। রাজ্যে তৃতীয় তৃণমূল সরকারের প্রথম বিধানসভা অধিবেশন শুরু সময় বিধায়করা সাদা পাজামা-পাঞ্জাবির সঙ্গে গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পড়ে এসেছিলেন। আর কপালে ছিল গেরুয়া তিলক। মহিলা বিধায়কদের কপালেও ছিল গেরুয়া তিলক, গলায় ঝোলানো ছিল উত্তরীয়।
স্বাভাবিকভাবে প্রধান বিরোধী দলের সব বিধায়কের পরনে একই রকম পোশাক দেখে চোখে লেগেছিল সকলেরই। এমনকী সংবাদমাধ্যমেরও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে উত্তরে শুধু বলেছিলেন, ‘গেরুয়া মানে সনাতন ভারত এবং স্বামী বিবেকানন্দের প্রতীক।’ তবে বিজেপি সূত্রে খবর, শুধু ওই দিনই নয়, এবার থেকে বিধায়কদের ‘ড্রেস কোড’ বলে দিয়েছেন খোদ শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী, অধিবেশনে এই ড্রেস কোড মেনেই পোশাক পড়ে আসতে বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূলের পাশাপাশি জনতা পার্টি ও জনসঙ্ঘের বিধায়করাও বিভিন্ন সময়ে বিধায়ক হয়েছিলেন। কিন্তু এর আগে কখনও কোনও দল বিধায়কদের ‘ড্রেস কোড’ বেঁধে দিয়েছে এমনটা দেখা যায়নি। এভাবে নির্দিষ্ট ড্রেস কোড মেনে বিধানসভায় আসা তাও এক নির্দিষ্ট সাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক নিয়ে আসা শুধু রাজ্যে না দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
এই বিষয়ে বিজেপির এক বিধায়ক বলেন, ‘শুভেন্দুদার নির্দেশ মতো বিজেপির সমস্ত বিধায়ক এই রকম পোশাক পড়ে অধিবেশনে আসবেন। শুক্রবার সকলকেই সাদা পোশাক পরে আসতে বলা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিরোধী দলনেতার ঘরেই সকলের কপালে তিলক ও গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’ বিজেপির আরও এক বর্ষীয়ান বিধায়ক বলেন, ‘বর্তমানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল আমরাই। আমাদের যে একটি নির্দিষ্ট দর্শন আছে তা বোঝাতেই এই পোশাক পরা হবে।’ অর্থাৎ, স্কুল পড়ুয়াদের মতো বিধায়কদের পাঠশালায় যে ড্রেস কোড মাস্ট, তা বলে দিলেন শুভেন্দু।