‘মানবতা ধ্বংসের মুখে, অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণার জয় দেখছে দেশবাসী’: সীতারাম কোইওয়াল

এনবিটিভি ডেস্কঃ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম কোইওয়াল দেশে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে বিরাজমান বৈধ নৈরাজ্যবাদ চলছে। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান মুনাওয়ার ফারুকীর একটি কমেডি শো বাতিল করার ঘটনা উল্লেখ করে কোইওয়াল বলেন, পুলিশের হস্তক্ষেপের পর চরমপন্থীদের দ্বারা স্পনসর করা চলমান অসহিষ্ণুতার সিরিজের সর্বশেষ ঘটনা। যেটির জন্য সম্পূর্ণরূপে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দায়ী। এই সমস্ত কাজগুলির দ্বারা মানবতাই ধ্বংসের মুখে এবং ঘৃণার জয় হচ্ছে।

পুলিশের সহযোগিতায় শ্রীরাম সেনা এবং হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী দলগুলির হুমকি যে, তারা কোনভাবেই অনুষ্ঠানটি চালাতে দেবে না, কারণ এটি হিন্দু দেবতাদের অপমান করে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে মনে করে তারা।

এক বিজেপি নেতার ছেলের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে কমিডিয়ান মুনাওয়ারকে জেল হেফাজতে রাখা হয়েছিল এর আগে। হিন্দুত্ববাদীদের অভিযোগ যে, নতুন বছরের স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শো হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। 

প্রসঙ্গত, ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের হুমকির কারণে গত দুই মাসে তার প্রায় এক ডজন শো বাতিল করা হয়েছে। যার ফলে এই কমেডিয়ান  কমেডি ছেড়ে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বর্তমান ভারতে মুসলমানদের উপর অবিচার, সহিংসতা ও নৃশংসতা প্রকাশের সহজ উপায় হল, হিন্দু ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাতএর বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আসা, সেটা সত্যি কিংবা মিথ্যা হোকনা কেনও।  যদিও ফারুকীর এই  অনুষ্ঠানের সাথে ধর্মীয় অনুভূতির কোন সম্পর্ক নেই। ফারুকির হাস্যরসাত্মক কমিক রুটিনে আরও অনেক কিছু বিষয় যুক্ত ছিল। তার মধ্যে অন্যতম হল সামাজিক চিরাচরিত নিয়ম, সাম্প্রদায়িক মনোভাব এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, রাজনীতি এবং বিশেষ করে বিজেপির রাজনৈতিক বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এই হাস্যরসাত্মক প্রোগ্রাম গুলি হিন্দি এবং ইংরেজির মিশ্রণে শোগুলি প্রচুর দর্শকদের আকর্ষণ করে। এই অনুষ্ঠানগুলি হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের খোঁচা দিলেও ধর্মীয় অনুভূতিতে কোনও প্রকার আঘাত হানে না।

 

সীতারাম আহ্বান জানিয়ে বলেন, মুনাওয়ারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত হানা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী শক্তি যারা দুর্ভাগ্যবশত দেশের শাসক, তারা কোনো প্রকার সমালোচনা বা ভিন্নমত সহ্য করতে প্রস্তুত নয়। তারা ফারুকীর মতো লোকদের দেখেই ভয় পায়, যারা সাধারণ মানুষের সাথে সরলভাবে কথা বলেন।দেশের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জনগণকে মানবতাকে হারাতে এবং ঘৃণার জয় হতে দেওয়া উচিত নয়।

Latest articles

Related articles