মুর্শিদাবাদ, বিশেষ প্রতিবেদক: নানা দুর্নীতির অভিযোগে মুর্শিদাবাদ পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে তূণমুল কংগ্রেস বিপ্লব চক্রবতীকে অপসারিত করেছিল । চলতি পৌরসভা নির্বাচনেও বিপ্লব চক্রবর্তী কে একদম শেষ মুহূর্তে টিকিট দেয়া হয়। যদিও নানা গুঞ্জন ছিল উপরমহলের কর্তাদের তদারকিতে তিনি এই টিকিট পেয়েছেন। কিন্তু ভোট যতই এগিয়ে আসছে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য নিয়ে সরব হচ্ছেন সাধারণ ভোটাররা। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগেও তার বিরুদ্ধে বহিরাগতদের এনে এবং ভোট কেনার নানা অভিযোগ সামনে আসছে ।
এ নিয়ে নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদ পুরসভায় ফের সরগরম । মুর্শিদাবাদ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট পেয়েছেন বিপ্লব চক্রবর্তী। এই ওয়ার্ডে নেই কোন উন্নয়নের ছাপ।মানুষের আক্ষেপ আবার যদি এই ব্যাক্তি জযী হন তাহলে এলাকার কোনো উন্নয়ন হবে না।যদিও তার ওপরে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে । ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে এই বিপ্লব চক্রবর্তী বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
২০২১সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজ্যের পুরো ও নগর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কে বিপ্লব চক্রবতীর নামে এক বিরাট অভিযোগ জমা দেয় লালবাগের নাগরিকবৃন্দ। সেই অভিযোগে প্রায় দুই কোটি ৯০লক্ষ টাকা তছরুপের একটা হিসাব তুলে ধরা হয়।
তাদের অভিযোগ ছিল বেশকিছু ওয়ার্ডে কাজের নাম করে টেন্ডার করা হয় । কিন্তু আদৌ কাজ হয়নি।কাজ না করে টাকা তুলেওয়ার অভিযোগ করে চিঠি দেওয়া হয়। তাই তারা প্রশ্ন তুলছেন এধরনের ব্যাক্তিকে যদি আবার পৌরসভার জয়ী করা যায় তাহলে লালবাগের উন্নয়ন তো দূরের কথা ,মানুষ আবার বিক্ষুব্ধ হয়ে যাবে । তাই কোন লোকই চাইছেন না বিপ্লব চক্রবর্তীর মতো মানুষ আবার ভোটে জয়ী হন । তাদের দাবি নির্দল প্রার্থী বিশ্বজিত ধর অনেক কাজের মানুষ।নানা দুনীতির চিত্র তুলে নির্দল প্রার্থী বিশ্বজিৎ ধর ও তার সমথকরা বিপ্লব চক্রবতীর বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন ।
মুর্শিদাবাদ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন বিশ্বজিৎ ধর । তিনি প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছেন সরকার কনস্ট্রাকশন, লোকনাথ কনস্ট্রাকশন সহ আরো কয়েকটি সংস্থা ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। কাজ না করে সমস্ত টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন বিশ্বজিৎ ধররের আরও অভিযোগ বিপ্লব চক্রবর্তী শাশুড়ি সন্ধ্যা মজুমদার বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক । একজন গূহবধু কি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন তদন্ত করা দরকার ।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যুত সাহার অভিযোগ কোন কাজ না করেই টাকা তুলেছেন । এলাকার উন্নয়ন করেননি কলকাতা, দিঘা,পুরীতে বেনামে হোটেলে তৈরি করেছেন । লালবাগ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়াডের লিটন দাসও একই অভিযোগ করেন। বিশ্বজিৎ ধরের আরও অভিযোগ বিপ্লব চক্রবর্তী ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন কাজের টেন্ডার হয়। কিন্তু কোন কাজ হয়নি ।
২০২০ থেকে ২০২১ এর মধ্যে কাজ না করে টাকা তুলে নিয়েছে। এ কাজের সঙ্গে লোকনাথ এন্ড কোং হরপিয়া অধিকারী, বালা কনস্ট্রাকশন সহ আরো কয়েকটি সংস্থা জড়িত বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি ওয়াক অডার রয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে তিনি যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও কোনো কাজ করেননি । ফলে মানুষ ক্ষোভে ফুসছে।
বিশ্বজিৎ ধর প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিপ্লব চক্রবর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের জয়েন করেন। কিন্তু তারপরই দলকে ভুলে গিয়ে আত্মসাতের ময়দানে নেমে পড়েন।মানুষ তার কাছ থেকে যা আশা করেছিল তার কিছুই পায়নি। তার কাজকর্মে এলাকার মানুষ ভীষণভাবে অসন্তুষ্ট । ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীকে জয়ী করার আহ্বান জানাচ্ছেন।