প্রেমের টানে বিহার থেকে হিলি: উপহারের খরচে পকেট ফাঁকা, ছাগল চুরির অভিযোগে প্রেমিক আটক
ভালোবাসার টানে মানুষ কত কিছুই না করে। তবে বিহারের এক যুবকের কাহিনি যেন রূপকথাকেও হার মানায়। প্রেমিকার আবদার মেটাতে তিনি যা করলেন, তা শুনে অবাক হতে হয়।
পাঁচ বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে হিলি থানার এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় ওই যুবকের। প্রেমের টানে তরুণী একসময় বিহারে পালিয়েও যান। কিন্তু বেকার প্রেমিকের সংসার দেখে তিনি ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে। তবে প্রেমের আগুন তখনও নিভে যায়নি। গোপনে চলতে থাকে তাদের সম্পর্ক।
সম্প্রতি সরস্বতী পুজোর সময় প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে বিহার থেকে হিলিতে আসেন যুবক। সারাদিন ঘোরাঘুরি, রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া, উপহার—সব মিলিয়ে পকেট ফাঁকা হয়ে যায় তার। হোটেলে থাকার টাকাও নেই। তাই স্থানীয় একটি ডাম্পিং গ্রাউন্ডে শ্রমিকদের সঙ্গে রাত কাটান তিনি।
ভ্যালেন্টাইনস ডে আসছে। প্রেমিকাকে বিশেষ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু টাকা কোথায়? অবশেষে নিরুপায় হয়ে ছাগল চুরির সিদ্ধান্ত নেন যুবক। বৃহস্পতিবার কামারপাড়া এলাকায় একটি ফাঁকা মাঠ থেকে ছাগল চুরি করে হাটে বিক্রি করতে যান। কিন্তু ধরা পড়ে যান স্থানীয়দের হাতে। তারা উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাকে।
খবর পেয়ে থানায় ছুটে আসেন প্রেমিকা। তিনি বলেন, “বাড়ি থেকে আমাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তাই বাইরে দেখা করতাম। ওর টাকার অভাবের কথা জানলে আমি সাহায্য করতাম। ও আমাকে খুব ভালোবাসে, আমার জন্য পাগল।”
বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস জানান, ছাগল চুরির অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তবে মালিক অভিযোগ না করায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রেমের টানে এমন ঘটনা বিরল। তবে ভালোবাসার জন্য মানুষ যে কতদূর যেতে পারে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।
ভারতে বেকারত্বের ক্রমবর্ধমান হার দেশের যুবসমাজের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এবং ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের (আইএইচডি) যৌথ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশের বেকার জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশই যুবক। ২০২২ সালে দশম শ্রেণি বা তার বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে এমন বেকারের সংখ্যা ছিল ৬৫.৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে ছিল ৩৫.২ শতাংশ।
শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বেশি উদ্বেগজনক। স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৯.১ শতাংশ, যেখানে অশিক্ষিতদের মধ্যে এই হার মাত্র ৩.৪ শতাংশ। অর্থাৎ, স্নাতকদের বেকারত্বের হার অশিক্ষিতদের তুলনায় প্রায় নয় গুণ বেশি।
সরকারের পক্ষ থেকে বেকারত্ব হ্রাসের দাবি করা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে বলে সরকারি তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তবে, এই পরিসংখ্যান দেশের সামগ্রিক বেকারত্বের প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত করে না।
বেকারত্বের এই সংকট দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ। সরকারের উচিত অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যুবসমাজের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারে।