
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে দুই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য, অপ্রীতিকর অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে এলাকা। অভিযোগ, এই দুই শিক্ষিকারা ছাত্রদের জোরপূর্বক পোশাক খুলে তাদের গোপনাঙ্গ দেখাতে বলতেন। ঘটনাটি সামনে আসার পর থানায় পকসো আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশি তদন্ত শুরু হলেও, অভিযুক্ত শিক্ষিকাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র।
কয়েকজন অভিভাবকের দাবি, স্কুল থেকে ফিরে শিশুরা বারবার অস্বাভাবিক আচরণ ও কান্না করতে থাকে। এক পর্যায়ে শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শিক্ষিকাদের নির্দেশে তাদের প্যান্ট খুলে দিতে হতো। একাধিক শিশুর কাছ থেকে একই ধরনের বর্ণনা মিললে অভিভাবকরা হন্যে হয়ে যান। স্থানীয় থানায় অভিযোগ দাখিলের পর পকসো আইনে মামলা রুজু হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষিকাদের দাবি, পুরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে চলা বেতন বন্ধের লড়াইয়ের জেরে তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এই শিক্ষিকাদের টার্গেট করা হচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই পুরসভা তাদের বেতন আটকে রেখেছিল, যা আদালতের হস্তক্ষেপে পুনরায় চালু হয়। এখন নতুন করে এই মামলার মাধ্যমে তাদের চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে।”

বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস করা হবে না। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি পুরসভার শিক্ষা কমিটি স্বতন্ত্রভাবে ঘটনা খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি সম্মান থাকলেও, এমন অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গোরাবাজার ও সৈয়দাবাদের দুই অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে গত বছর কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ এনে বেতন বন্ধ করে দেয় পুরসভা। কলকাতা হাইকোর্ট ও ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে তাদের বেতন ফিরে পেলেও, বর্তমান অভিযোগকে পুরসভার প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অভিযুক্তরা।
আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি ঐ শিক্ষিকাদের পক্ষে জনসমর্থন গড়ে তুলতে প্রয়াস চালাচ্ছেন অধীর চৌধুরী। অন্যদিকে, অভিভাবকরা দ্রুত ন্যায়বিচার চাইছেন। শিশুদের সুরক্ষা ও বিচারপ্রক্রিয়া কী গতি নেয়, তা এখন স্থানীয়দের মূল উদ্বেগের বিষয়।