ভারতের প্রথম মানববাহী মহাকাশ মিশন “গগনযান”-এর উৎক্ষেপণ তারিখ আবারও পেছাল। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এখন ২০২৭ সালের প্রথমার্ধের আগে এই মিশন শুরু করতে পারবে না বলে ঘোষণা করে। জীবনরক্ষাকারী সুরক্ষিত প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে এই বিলম্বের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসরো’র পরিকল্পনা অনুযায়ী, গগনযান মিশনের আগে তিনটি অনাবাসিক (অন-ক্রু) পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হবে। প্রথম মিশন “জি১” চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে সম্পন্ন হবে। এতে “ব্যোমমিত্র” নামের একটি অর্ধ-হিউম্যানয়েড রোবট পাঠানো হবে, যা মহাকাশযানের ভেতরের পরিবেশ ও প্রযুক্তির তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর ২০২৬ সালে “জি২” ও “জি৩” মিশন অনুষ্ঠিত হবে। এই তিনটি সফল পরীক্ষার পর ২০২৭ সালের শুরুতে প্রথম মানববাহী উৎক্ষেপণ “এইচ১” পরিচালিত হবে।

গগনযান মিশনের জন্য ইতিমধ্যে চার জন মহাকাশ যাত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এরা হলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাবেক টেস্ট পাইলট প্রসন্ত বালকৃষ্ণন নায়ার, অজিত কৃষ্ণন, অঙ্গদ প্রতাপ ও শুভানশু শুক্লা। তারা বর্তমানে কঠোর প্রশিক্ষণের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছেন।

মানববাহী এই মিশনে ব্যবহার করা হবে “এইচএলভিএম৩” রকেট, যা বিশেষভাবে নভোচারীদের নিরাপত্তার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। রকেটটিতে জরুরি অবস্থায় ক্রু মডুলকে আলাদা করার ব্যবস্থা সহ উন্নত সেফটি প্রোটোকল যুক্ত করা হয়েছে। ইসরো জানিয়েছে, রকেট, গ্রাউন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ৯০% উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে।

গগনযান সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া (সোভিয়েত ইউনিয়ন) ও চীনের পর ভারত চতুর্থ দেশ হিসেবে স্বাধীনভাবে মানববাহী মহাকাশ মিশন পরিচালনার কৃতিত্ব অর্জন করবে। নভোচারীরা প্রায় ৩ দিন ধরে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে অবস্থান করে নিরাপদে ফিরে আসবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে।

ভারতের মহাকাশমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছেন, “জীবন ঝুঁকিতে থাকায় আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করছি না। গগনযান মিশন সফল করতে সব ধরনের প্রযুক্তিগত ও নিরাপত্তা পরীক্ষা অত্যাবশ্যক।” এই মিশন ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীমহলে ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।