
এক মুসলিম তরুণ এসি সার্ভিস টেকনিশিয়ানকে তার ধর্ম জানার পর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবককে ধর্মীয় পরিচয় জানার পর বাড়ির মহিলা তাকে প্রবেশ করতে দেননি, বরং কুকুর ছেড়ে দেবার হুমকি দেন। ঘটনাস্থলটি এখনও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত না হলেও, সাম্প্রতিক পাহালগাম হামলার পর দেশজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বাড়ার প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই টেকনিশিয়ান মহিলাকে জিজ্ঞাসা করছেন, “আপনি কি বলেছেন হিন্দু টেকনিশিয়ান পাঠাতে?” উত্তরে মহিলা ভিডিও রেকর্ডিং বন্ধ করতে ও সেখান থেকে চলে যেতে হুমকি দেন। উত্তপ্ত এই সংলাপে যুবকটি বলেন, “এই গরমে কেউ কাজ করতে এসেছে, তাকে ধর্ম জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। এটাই আমাদের বর্তমান অবস্থা। তিনি আমার ধর্ম জেনে বলেছেন, মুসলিমরাই দেশে সমস্যা সৃষ্টি করে।”
এপিসিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর দেশে ১৮৪টি মুসলিমবিরোধী হিংসাত্মক ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। সম্প্রতি বিজেপির নয়া দিল্লি কো-কনভেনর দেবমানি শর্মাও মুসলিম টেকনিশিয়ানদের সেবা নিতে অস্বীকার করে পাহালগাম ঘটনার উল্লেখ করেছিলেন। তার ভাইরাল হওয়া বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, “আমি মুসলিমদের দ্বারা কাজ করাতে চাই না।”
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন তুলছেন, “কোন ধর্মের মানুষ সার্ভিস দেবে – সেটা কি এখন বাছাইয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে?” অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলি এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “পেশাদারিত্বকে ধর্মের পাল্লায় মাপা সমাজের জন্য অশনি সংকেত।”
স্থানীয় বাসিন্দা এক যুবকের কথায়, “এসি সার্ভিসের মতো সাধারণ সেবায় যদি ধর্মীয় বিভেদ আসে, তাহলে আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?” ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক এফআইআর নথিভুক্ত হয়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।