বাবা-মায়ের অশান্তির জেরে আত্মহত্যা একাদশ শ্রেণির তরতাজা যুবকের

গোলাম হাবিব, মালদা: দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তি। একসঙ্গে থাকে না বাবা, মা। সেই নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিল ছেলে। সেই অবসাদের জেরে আত্মহত্যা ১৯ বছরের ছেলের। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা জুড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভাটোল গ্রামে।

জানা গিয়েছে, ভাটোল গ্রামের বাসিন্দা নন্দলাল গোস্বামী এবং তার স্ত্রী সবিতা গোস্বামী। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলের নাম সাহিল গোস্বামী(১৯)। ঘরের এক কোণে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে সাহিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান,বাবা-মায়ের অশান্তির ফলে মানসিক অবসাদ থেকে এই আত্মহত্যা।সাহিলের বাবা মায়ের মধ্যে দীর্ঘ আট বছর ধরে অশান্তি। অশান্তির জেরে স্বামীকে ছেড়ে সবিতা গোস্বামী পূর্ণিয়া জেলায় বাপের বাড়িতে থাকতো। সাহিলের দিদি মায়ের সাথে থাকতো। কিন্তু সাহিল থাকত তার বাবার সাথে। নন্দলাল গোস্বামী মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করতেন। যার জন্য সবিতা বাপের বাড়ি থাকত। সবিতার অভিযোগ তার স্বামী তাকে মারধর করতো। এমনকি ছেলের মৃত্যুর ঘটনা তার স্বামী তাকে জানায় নি। আত্মীয়দের কাছ থেকে ফোন মারফত জানে সে। সবিতা গোস্বামী এখন তার ছেলের মৃত্যুর বিচার চাইছে। এদিকে তরতাজা যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

মৃত যুবকের মা সবিতা গোস্বামী বলেন,” আমার স্বামী আমার ওপর অত্যাচার করত তাই বাপের বাড়ি থাকতাম। দীর্ঘ আট বছর ধরে আমাদের মধ্যে অশান্তি। সেখানেই আমার কাছে ফোন আসে ছেলে আত্মহত্যা করেছে। এখানে কি হয়েছিল না হয়েছিল, বাবা ছেলের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়েছিল কিনা সেটা বলতে পারবো না। কিন্তু আমি বিচার চাই”। অন্যদিকে মৃত যুবকের বাবা নন্দলাল গোস্বামী বলেন, “আমি কাজের জন্য বাইরে গেছিলাম। সেই সময় আমার কাছে ফোন আসে ছেলে আত্মহত্যা করেছে। কি হয়েছে আমি ঠিক বলতে পারব না। কারন আমার ছেলে এমনিতে ঠিক ছিল। একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছিল এবার”।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর বিকাশ হালদার বলেন,” প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে তার বাবা-মায়ের মধ্যে ঝামেলার জন্য মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

১৯ বছরের এক তরতাজা প্রাণ। সে যখন জীবনের কাছে হার মেনে আত্মহত্যা করেছে তার মানে মানসিক ভাবে অশান্তিতে ছিল সে। হয়তো তার বাড়ির লোক বুঝতে পারলেও সেটা স্বীকার করছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পুলিশের উচিত সমগ্র ঘটনা খতিয়ে দেখা। কারণ সমাজে কম বয়সীদের মধ্যে দিন-দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।

Latest articles

Related articles