আসাম মিজোরামের মধ্যে সংঘাত

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

a525594e-eee8-11eb-8e1b-864212280c54_1627396990298

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম এবং মিজোরাম গত সপ্তাহে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে বেশ কয়েকজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ১৩ লাখ জনগোষ্ঠীর পাহাড়ি রাজ্য মিজোরামের সাথে ভারতের বাকি অংশের সংযোগ যে মহাসড়কের মাধ্যমে হয়েছে, সেই ব্যস্ত মহাসড়কটি আজকাল অস্বাভাবিক শান্ত।মিজোরাম রাজ্যটির সাথে রয়েছে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের সীমান্ত।

 

মিজোরাম ও আসামের মধ্যে চলমান উত্তেজনা চরম আকার নেয় গত ২৬শে জুলাই। ওইদিন দুই রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় রাজ্যদুটির পুলিশবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে সাতজন নিহত এবং ৬০ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছয়জনই আসামের পুলিশ সদস্য।মিজোরামের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে, আসামের প্রায় দুইশ পুলিশ একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে সীমান্ত শহর ভাইরেংতের একটি পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে নেয়।এরপর স্থানীয় মিজোরা আসামের পুলিশদের বহনকারী বাস পুড়িয়ে দেয়। তারা আসামের গ্রামবাসীদের সাথেও সংঘর্ষে জড়ায়।

স্থানীয় মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) মিজোরাম শাসন করে এবং তারা ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপির নেতৃত্বাধীন নর্থ-ইস্ট ডেমোক্রেটিক জোটের একটি অংশ।প্রতিবেশী আসামও শাসন করছে বিজেপি সরকার। কিন্তু সেটা দুই রাজ্যের নেতাদেরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে পারেনি।

মিজোরাম বলেছে যে তারা এখন আসামের ‘অর্থনৈতিক অবরোধের’ মুখে পড়েছে। কারণ আসাম থেকে মিজোরামে কোন যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না।আসাম থেকে আসা পণ্য সরবরাহের উপরই মিজোরাম নির্ভর করে। বেশ বড়সড় একটি রাজ্য আসাম, যেখানে তিন কোটি মানুষের বসবাস।এই রাজ্যের মানুষ কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করে বিপর্যস্ত। রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে সেখানকার ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং টেস্টিং কিট ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে।

 

তবে ১৯৭২ সালে এটি একটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল হিসাবে আলাদা হয়ে যায়।পরে দিল্লি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী এমএনএফ-এর মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে মিজোরাম একটি আলাদা রাজ্যের মর্যাদা পায়।ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলটি ভারতের বিরুদ্ধে টানা ২০ বছর গেরিলা অভিযান চালিয়েছিল।আসামের সাথে মিজোরামের ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।এরমধ্যে বিতর্কিত হল ১৩১৮ বর্গ কিলোমিটার (৫০৯ বর্গ মাইল) এলাকা। যা পাহাড় ও বনভূমি বেষ্টিত।১৮৭৫ সালের ব্রিটিশ আইনের ভিত্তিতে মিজোরাম এই অংশটিকে নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু আসাম জোর দিয়ে বলে আসছে যে এটি তাদের সাংবিধানিক সীমানার অংশ।চলতি বছরের জুন থেকে, এই বিতর্কিত এলাকায় বসবাসকারী মিজো গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন যে, আসাম পুলিশ, স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাথে নিয়ে তাদেরকে এই অঞ্চল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে।মিজো গ্রামবাসী লালথানপুই বলেন, ১০ই জুলাই আসাম পুলিশ ও গ্রামবাসী তার বসতিতে হানা দেয়ায় তিনি পালিয়ে আসেন আর আসামে রেখে আসেন তার পুরো ফসল।ওই এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট একটি নদী, মিজোরাম ও আসামের পুলিশ ক্যাম্পকে আলাদা করেছে। ওই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর