নিজস্ব সংবাদদাতা, আরামবাগ, এনবিটিভি: একটি ইউটিউব নিউজ পাের্টালের সঙ্গে হুগলির আরামবাগ পুলিশ ও প্রশাসনের বিবাদ চরমে উঠেছে। এমন পর্যায়ে এই বিবাদ পৌঁছেছে যে, আপাতত বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারাধীন। মঙ্গলবার সেই কেসের শুনানি হয়ে গেল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। কিন্তু এরই মধ্যে বিতর্ক ছড়িয়েছে অন্য একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে।
উল্লেখ্য, উক্ত ইউটিউব নিউজ পাের্টালের কর্ণধার সফিকুল ইসলামের আরামবাগ শহরে একটি একতলা বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িতেই তার স্টুডিও। ২ জুন আরামবাগ পৌরসভা থেকে একটি নােটিশ সফিকুলবাবুর বাড়িতে পাঠানাে হয় এই মর্মে যে, উক্ত নির্মাণটি বেআইনি। কারণ, বাড়িটির প্ল্যান হাতে না নিয়েই নাকি বাড়িটি তৈরি করেছেন সফিকুলবাবু।
নােটিশে পরিষ্কার লেখা রয়েছে, ‘এত দ্বারা আপনাদিগকে জানানাে যাইতেছে যে, আপনারা পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন ১৯৯৩ এবং পৌরবিধি ১৯৯৬ লঙ্ঘন করিয়া ২১৮ (১) ধারা মতে বেআইনিভাবে প্ল্যান অনুমােদন না লইয়া গৃহ নির্মাণ করিয়াছেন। এ প্রসঙ্গে আরামবাগ পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার নিশীথকুমার ভৌমিক জানান, বাড়িটি বেআইনিভাবে নির্মিত হয়েছে। বেশকিছু বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই নােটিশ পাঠানাে হয়েছে ৯ তারিখের মধ্যে হাজির হতেও বলা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ তারপর নেওয়া হবে । এপ্রসঙ্গে সফিকুলবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে উড়িষ্যায় আছি। বাড়িটিতে পরিবার থাকলেও এই ধরণের নােটিশের কথা আমার জানা নেই। এটা সুপরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে । আরও কত রঙ্গ আমাদের দেখতে হবে তার ঠিক নেই। তিনি আরও বলেন যে, আমার বাড়ির প্ল্যান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বাড়িতে নিয়ে চলে আসেন। কী অধিকারে? তাছাড়া যেভাবে আমি নিয়ম মেনে বাড়িটি করেছি তাতে আমার কোনও গলদ নেই। তাছাড়া আমার ওই বাড়ির স্টুডিওতে স্বপনবাবু বার কুড়ি এসেছেন। এতােদিন পরে কেন নােটিশ পাঠানাে হল?
তবে এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বর্তমান পুর প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন , বাড়ির প্ল্যান আমার কাছে থাকার কোনও প্রশ্নই নেই। কারণ এটা অফিসেই থাকে। প্ল্যান দেখেন এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং ইঞ্জিনিয়াররা। তাছাড়া অফিস থেকে কোনও কাগজপত্র আনতে গেলে সেটা রিসিভ করিয়ে নিয়ে আসতে হয়। প্ল্যান অনুমােদনের ক্ষেত্রে পৌরসভার একটি বডি রয়েছে। জেনারেল মিটিং করেই এটা পাশ করা হয়। স্টুডিওতে ইন্টারভিউ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কার কী প্ল্যান আছে সেটা আমার দেখার তাে কথা নয়। সেখানে আমি এসব না জেনেই গিয়েছি।
অন্যদিকে এই বিষয়ে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র হালদার বলেন, পৌর এলাকায় বাড়ির প্ল্যান অনুমােদনের ক্ষেত্রে আমরা ড্রাষ্ট দেখে সই করি। এরপর এক্সিকিউটিভ অফিসার বাকি বিষয়গুলি দেখে সই করেন। এখানে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানের সেই অর্থে কোনও ভূমিকাই নেই। যদিও আরামবাগ পৌরসভার এই নােটিশকে ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।