
কৈথালের মস্তগড় এলাকার বাসিন্দা দেবেন্দ্র সিংকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে গোপন যোগাযোগ ও সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ ও সামরিক গোয়েন্দা দল। আজ সাইবার পুলিশ স্টেশনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলা জেরার পর তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে একের পর এক অপ্রকাশিত তথ্য।
গত ১৩ মে কৈথাল সাইবার পুলিশ প্রথম দেবেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ, সে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবৈধ অস্ত্রের ছবি পোস্ট করছিল। তবে তদন্ত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ে আরও বড় ষড়যন্ত্র। জানা গেছে, দেবেন্দ্র বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। তাদের কাছে পাঠাত দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য।
আজ দুপুর দুইটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল সাতটা পর্যন্ত চলে জেরা। প্রথমে এনআইএর তিন সদস্যের একটি দল প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে প্রতিটি বিষয় নিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করে। এরপর সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ টিম প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আলাদাভাবে জেরা চালায়। সূত্রে জানা গেছে, দেবেন্দ্রের মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে উদ্ধার করা ডেটা বিশ্লেষণ করে তার যোগাযোগের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।

তদন্তে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে:
- দেবেন্দ্রের কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) বিশ্লেষণ করে তার সম্ভাব্য সকল সংযোগ চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে
- মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে মুছে ফেলা ডেটা পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে
- সে কোন কোন সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করেছে, তার একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে
- আইএসআই এজেন্টদের সঙ্গে তার যোগাযোগের পদ্ধতি ও গোপন কোড সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে
আগামীকাল দেবেন্দ্রকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। তদন্ত সংস্থাগুলো আদালত থেকে তার কাস্টডি নিয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত চালাতে পারে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের জেরায় দেবেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আইএসআই-এর সঙ্গে তার যোগাযোগ বেশ কয়েক মাস ধরে চলছিল। সে কীভাবে এই সংযোগ গড়ে তুলল এবং কারা তাকে সাহায্য করেছিল, সেই বিষয়েই এখন তদন্তের মূল ফোকাস।
এই ঘটনায় কৈথালের মস্তগড় এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, কীভাবে একটি সাধারণ যুবক এত বড় দেশবিরোধী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ল। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ঘটনাকে খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই এই মামলার আরও অনেক অজানা দিক সামনে আসবে।