এখানে সুড়ঙ্গ করে মৃতদেহ লোপাট করে দেওয়া হত,বিস্ফোরক তৃণমূল সুপ্রিমো

বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে নির্বাচন। তার আগের দিন হুগলির সিঙ্গুর এবং গোঘাটে নির্বাচনী সভা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর গোঘাটের সভা থেকে বিজেপির পাশাপাশি সমানভাবে ইশারা করলেন সিপিএম তথা বামেদের। তিনি বলেন, ” সিপিএমের সময় গোঘাট, আরামবাগ, গড়বেতার কি অবস্থা ছিল আমি জানি। একবার আমি গড়বেতায় মিটিং করতে গিয়েছি।

এক বৃদ্ধা আমাকে বললেন, আমাকে একটা বন্দুক দিতে পারো। আমি প্রশ্ন করলাম বন্দুক নিয়ে মা কি করবেন? তিনি বললেন দুই ছেলের হত্যার বদলা নেবেন। এই ছিল সিপিএম। সবাইকে খুন করে ভয়ের পরিবেশ জারি রেখেছিল। গোঘাটে সুড়ঙ্গ করেছিল। এখান দিয়ে প্রচুর মৃতদেহ লোপাট করে দেওয়া হয়। আমি যদি তখন থেকে নিয়মিত এখানে না আসতাম, তাহলে কি হতো ভেবে দেখুন”।

অত্যন্ত ভাবনাচিন্তা করেই সিপিএম তথা বামেদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়েছেন মমতা। কিছুদিন আগেও তিনি প্রতিটি জনসভা থেকে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছিলেন বামেদের কাছে।

মমতা বলতেন, আপনারা সরকার করতে পারবেন না। তাই বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলকে ভোট দিন। কিন্তু এতে তৃণমূলের লাভ হয়নি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যে মমতা প্রবলভাবে সিপিএমের বিরোধিতা করে গিয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরে, এখন যদি তিনি একটু নরম ভাবে কথা বলেন বামেদের সম্পর্কে, তাতে অন্য রকম বার্তা যেতে পারে তৃণমূল ভোটারদের কাছে।

প্রধানত এই কারণেই মমতা বেশ কয়েকদিন ধরেই বিজেপির পাশাপাশি সিপিএম তথা বামেদের প্রবল আক্রমণ করছেন। বুধবার গোঘাটের সভা থেকে তিনি বামেদের ব্যাপক আক্রমণ করেছেন। এর পাশাপাশি বিজেপিকে নিশানা করেছেন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে। তিনি বলেন, ” বিজেপি বাংলাকে ঘৃণা করে। অতীতেই আমরা বহুবার পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে আবেদন করেছি।

কিন্তু কেন্দ্র তাতে সম্মতি দেয়নি। ওরা বাংলাকে সম্মান করে না। জেনে রাখুন বাংলাকে উত্তরপ্রদেশ হতে দেব না। বাংলাকে হাথরস হতে দেব না।

একটা মেয়ের গায়ে হাত দিতে দেব না।” সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কর্মসংস্থানের বার্তা দিয়েছেন সভা থেকে। মমতা বলেন, ” চাকরি দেব, প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। স্বাস্থ্যসাথী পাবেন। কিন্তু সবাইকে অনুরোধ করছি কেউ বিজেপিকে ভোট দেবেন না।”

এদিন ফের তিনি নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে বলেন, ” খাইয়ে-পরিয়ে মানুষ করেছি। এখন বুঝতে পারছি দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পুষেছি। নন্দীগ্রামে আমার কর্মীদের উপর মারধর করা হচ্ছে। হামলা করা হচ্ছে। তুমিও লড়বে, আমিও লড়ব। কিন্তু আমাদের কর্মীর ওপর হামলা কেন? শুধু নির্বাচন বলে চেপে যাচ্ছি। না হলে দেখে নিতাম কার কত ক্ষমতা।

কে কত বড় নেতা!” এভাবেই তিনি আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে। এর পাশাপাশি সিঙ্গুর থেকেও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন মমতা। এদিন হুগলিতে দুটি সভা করে ফের নন্দীগ্রামে ফিরে যাচ্ছেন মমতা।

Latest articles

Related articles