হিমাচল প্রদেশে শিক্ষার মান ও পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে বড়সড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। গত আড়াই বছরে একাধিক স্কুলে ছাত্র না থাকায় এবার একসঙ্গে ১২০০টি স্কুল বন্ধের ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী রোহিত ঠাকুর।
প্রকাশ্যে আসা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই পাহাড়ি রাজ্যের প্রায় ৪৫০টি স্কুলে কোনও নতুন ছাত্র ভর্তি হয়নি দীর্ঘ সময় ধরে। বাকি বহু স্কুলেও ছাত্র সংখ্যা এতটাই নগণ্য যে তা কার্যকরী শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার ও মজবুতিকরণের অংশ হিসেবে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ঠাকুর জানান, শিক্ষা পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। একাধিক ছোট ছোট স্কুলকে একত্র করে এক ছাতার নিচে আনার কথা ভাবছে সরকার। ছাত্র সংখ্যার ভিত্তিতে স্কুল মার্জ করার পরিকল্পনাও চলছে। শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানান, যদি কোনও স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্র সংখ্যা ২৫-এর নিচে থাকে, তবে সেই প্রতিষ্ঠানকে অন্য স্কুলের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হবে।
রাজ্যে শিক্ষক স্বল্পতা এখন প্রধান সমস্যা নয়। বরং পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলেও পড়ুয়াদের অভাবই চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে বর্তমান সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা জোরদার করতে ৬২০০ নার্সারি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যজুড়ে ২০০-র বেশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ স্থায়ী করা হয়েছে এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগে ৪৮৩ জন সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান সরকারের আড়াই বছরে ৭০০ জন লেকচারার নিয়োগ করা হয়েছে, যেখানে পূর্ববর্তী বিজেপি সরকারের পুরো পাঁচ বছরের শাসনকালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৫১১ জন।
তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত বার্ষিক শিক্ষা মূল্যায়ন রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠদক্ষতার ভিত্তিতে হিমাচল প্রদেশ দেশের অন্যতম সেরা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
এই পরিসংখ্যান ও পদক্ষেপগুলি দেখিয়ে দিচ্ছে, সরকার শিক্ষা খাতে গুণগত উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে গতি বাড়িয়েছে, যদিও ছাত্রসংখ্যা কমে যাওয়াটা ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে রাজ্য সরকারের আশা, বর্তমান পরিকল্পনা ও নতুন কাঠামো এই সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নেবে।