নয়া দিল্লির তীব্র অভিযোগ, পাকিস্তানের সেনা ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থরা সক্রিয়ভাবে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত। অপারেশন সিঁদুরে নিহত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের উপস্থিতি, কফিনে জাতীয় পতাকা জড়ানো এবং সামরিক সালামের ছবি-ভিডিওকে ভারত “জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার অকাট্য প্রমাণ” হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরেছে। প্রকাশিত তালিকায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফাইয়াজ হোসেন শাহ, মেজর জেনারেল রাও ইমরান সরতাজ, পঞ্জাব পুলিশের আইজি ড. উসমান আনোয়ারসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির নাম ও ছবি যুক্ত করা হয়েছে।
ভারতীয় বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি একটি সংবাদ সম্মেলনে পাক সেনাদের জঙ্গি কফিনের পাশে দাঁড়ানো ছবি উপস্থাপন করে প্রশ্ন তোলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দাবিদার পাকিস্তানের এই আচরণ কীভাবে গ্রহণযোগ্য?” এদিকে, সম্প্রতি সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ইসলামাবাদকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, জঙ্গি হামলার যেকোনো প্রচেষ্টাকে যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে “সন্ত্রাসবিরোধী” হিসেবে প্রচার করলেও, ভারতের প্রদর্শিত প্রমাণ এবং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সেনা-জঙ্গি আঁতাতের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও সাবেক ফাটা অঞ্চলে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পগুলি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দীর্ঘদিনের। এছাড়া, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC) এবং গিলগিট-বালটিস্তানে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রভাব এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা বাড়িয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ এবং কূটনৈতিক ফোরামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে FATF-এর মতো সংস্থাগুলোতেও ভারত সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।

এই উত্তেজনার প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘাত এড়াতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আরও জোরদার করার আশা করা হচ্ছে। তবে, ভারতের স্পষ্ট অবস্থান: “জঙ্গি হামলা মানেই যুদ্ধ—এবার পাল্টা জবাব হবে তাৎক্ষণিক ও কঠোর।”