নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর বিতর্কিত জয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার হাইকোর্টে মমতা, আগামীকাল শুনানি

নিউজ ডেস্ক : নন্দীগ্রামে বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে বিতর্কিতভাবে শেষ মুহূর্তে বিজয়ী বলে ঘোষণা করার বিরুদ্ধে এবার কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাসফুল শিবিরের তরফ থেকে বিষয়টিতে গণনায় কারচুপি সহ বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছে। একই অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তা আমল দেয়নি নির্বাচন কমিশন। তখনই নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির প্রতিনিধি বলে কটাক্ষ করে আদালতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এতদিন সরকার গঠন প্রক্রিয়া চলাকালীন তিনি কিছুই বলেননি। এবার আদালতে সেই পুনর্গণনার দাবিই তুলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে হাই কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, ভোট গণনার দিন টান টান উত্তেজনায় বলা হয়, ১২০০ ভোটে নন্দীগ্রামে জয়ী হয়েছেন মমতা। তার ঠিক কিছু ক্ষণ পরেই আবার খবর আসে, নন্দীগ্রামে মমতা নয়, জিতেছেন শুভেন্দু। ১৯০০-র কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে তিনি জিতেছেন নন্দীগ্রামে। পরে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। তখন থেকেই গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এ বার নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে পুর্নগণনার দাবি জানালেন খোদ মমতা।

গণনায় কারচুপির অভিযোগে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। গণনার সময়ে দু’ঘণ্টার জন্য সার্ভার চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে জোড়াফুল শিবির। এ ছাড়াও মমতা ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন প্রকাশ্যে আসার পরও নতুন করে গণনা করে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণার বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি শাসক দল। শুধু তাই নয়, মোবাইলে একটি মেসেজ দেখিয়ে মমতা সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, ‘‘এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “নির্বাচন নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাহলে একমাত্র উপায় হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক আইন অনুসারে ইলেকশন পিটিশন করা। নিয়ম হচ্ছে ভোট প্রক্রিয়া শেষে দেড় মাসের মধ্যে এই পিটিশন জমা দিতে হয়। হাইকোর্টে এই ধরনের মামলার শুনানি শুরু হলে টানা শুনানি চলে। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন গণনা নিয়ে তাঁর অভিযোগ আছে। সঙ্গে অন্যান্য অভিযোগ আছে। নিয়ম মেনেই মুখ্যমন্ত্রী দেড় মাসের মধ্যে সেই পিটিশনটি জমা দিয়েছেন। ২ মে ভোটের ফলাফল বেরিয়েছে। ১৭ জুন দেড় মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পিটিশন দায়ের করায় শুক্রবার থেকে মামলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছিলেন সেই প্রতিশ্রুতি মতোই তিনি কাজ করেছেন।” অবশ্য বিজেপির কুখ্যাত আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন আদালতে যাওয়ার জন্য।

Latest articles

Related articles