শুক্রবার বিধানসভায় ভােট অন অ্যাকাউন্ট বাজেটে একাধিক নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে রয়েছে যুবকদের কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন প্রকল্পের ঘােষণা, তেমনি রয়েছে অত্যন্ত কম পয়সায় ‘আম্মা কিচেনে’র মডেলে ‘মা কিচেন’।
মুখ্যমন্ত্রী ঘােষণা করেছেন, ১০০ কোটি টাকা খরচ করে কম পয়সায় রান্না করা খাবার রাজ্যের প্রত্যেক মানুষ পাবেন। ভাত-ডাল-মাছের একটি মিল অত্যন্ত কম পয়সায় পাওয়া যাবে। এই খাবার প্রকল্পের জন্য সারা বছর রাজ্য সরকার এক বছরে বিপুল খরচ করবে।
একইসঙ্গে রাজ্যের প্রান্তিক শ্রেণীর মহিলাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেও বিশেষ প্রকল্পের কথা ঘােষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রকল্পের নাম ‘মাতৃ বন্দনা’। এই প্রকল্পে রাজ্যের প্রান্তিক মহিলাদের নিয়ে গঠিত প্রায় ১০ লক্ষ স্বনির্ভর গােষ্ঠীর জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য দেড়শাে কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘােষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়াও, করােনার জন্য ভিনরাজ্যে কাজ হারানাে নির্মাণ শিল্প ও পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মাসিক এক হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘােষণাও এই বাজেটে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই খাতে ৪৫ লক্ষ শ্রমিক-কর্মীকে সহায়তা দেওয়া হবে।
শুধু এই নতুন প্রকল্পই ঘােষণা করা নয়, আগামী এক বছরে রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রেও দিশা দেখিয়েছে এই বাজেট। দেওচা-পাঁচমি, তাজপুর সমুদ্র বন্দর, অশােকনগরে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধানের মতাে একাধিক বিষয় উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই কারণগুলির জন্য সারা রাজ্যে আগামী এক বছরে বিরাট পরিমাণ শিল্প বিনিয়ােগ আসতে চলেছে। পাশাপাশি, এই ক্ষেত্রে বিরাট বিনিয়োগের সম্ভাবনাও রয়েছে। যা আখেরে রাজ্যের কর্মসংস্থানের চিত্রটাই বদলে দেবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ১০ বছরে রাজ্য প্রায় ১.১৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি, এই বাজেটে আগামী ৫ বছরে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খােদ মুখ্যমন্ত্রীও। অর্থাৎ তিনি গত দশ বছরে যে কর্মসংস্থানের তথ্য দিয়েছেন, আগামী ৫ বছরে তার চেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তা বাস্তবে কতটা সম্ভব তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরােধীরা।
পাশাপাশি, বাজেটে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের কথা ঘােষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এবার থেকে প্রতি বছর দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য আর্থিত সহায়তা করা হবে। নেতাজির লিখিত বইয়ের নাম অনুযায়ী এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘তরুণের স্বপ্ন’। তবে এত কিছু নতুন প্রকল্পের ঘােষণা ভােট অন অ্যাকাউন্টে করে ৫০ কোটির ঘাটতি বাজেট পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন দেখার এই ঘাটতি কী করে পূরণ করে রাজ্য সরকার।