সোমবার কর্ণাটকের গদাগ জেলায় ১৯ বছর বয়সী মুসলিম যুবক সমীর শাহপুরকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সন্ধ্যা 7.30 টার দিকে গদাগের নারাগুন্ড শহরে সমীর এবং তার বন্ধু শামসীর এর উপরে সংঘ পরিবারের গুন্ডারা আক্রমণ করে বলে অভিযোগ।
সমীরের বন্ধু অভিযোগ করেছেন, কয়েকদিন আগেই নারগুন্দ থানার কাছাকাছি স্থানেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা দিয়েছিলেন আরএসএস নেতা সঞ্জু নেলভাদে, নারাগুন্দ তালুকরা। নারাগুন্দে গতকাল সংঘপরিবার একটি প্রতিবাদ সমাবেশেরও আয়োজন করেছিল যেখানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল এবং পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল।
আরএসএস এর এই সভা করার পরেই এই আক্রমণ ঘটেছে।
সোমবার রাতে সমীর এবং তাঁর বন্ধু শামসির যখন বাইকে করে বাড়ি ফিরছিল তখন সাঙ্গারওয়ারার কাছে নারাগুন্ডা স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে অপেক্ষারত RSS-এর প্রায় 10-15 জন সদস্য তাদের বাইক থামিয়ে মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। আরএসএস এর গুন্ডারা তাকে ‘ত্রিশূল’ দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করে হত্যা করে। এই ঘটনা সেখানকার একটি সিসিটিভি ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে।
এই ঘটনার পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সমীর এবং তাঁর বন্ধু শামসিরকে হুবলির কর্ণাটক ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (KIMS) হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানেই স্মীর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, এবং শামসির গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
ছেলের হত্যাকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়া সমীরের বাবা বলেন, “আমার ছেলে খুবই কর্মঠে ছিল, সে তার কাকার রেস্তোরাঁ দেখাশোনা করত। সন্তানের মৃত্যুতে আমরা একেবারেই বাকরুদ্ধ। এমন কখনো হতে পারে সেটা আমি কখনই ভাবিনি। সমীর কখনো কারো সাথে কোনো শত্রুতা করেনি, সে ছিল খুবই দয়ালু মনের ছেলে। সমাজে যে ঘৃণার ইন্ধন দেওয়া হয়েছে তা আমার সন্তানকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করছি”।
সমীরের ভাই বলেন, “তারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে শুধুমাত্র তার ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে। আমরা সব হারিয়েছি। আমি আমার দুঃখ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। কিছুই আমার ভাইকে ফিরিয়ে আনতে পারে না, তবে ন্যায়বিচারের জয় হওয়া উচিত। তারা আমার ভাইয়ের সাথে যেভাবে আচরণ করেছে, কোনো নিরপরাধ জীবনের সাথে এমন আচরণ করা উচিত নয়”। এই ঘৃণা ছড়ানোকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন তিনি।
সমীরের পরিবার দাবী করেছেন এই ঘটনায় মল্লিকার্জুন হিরেমথ এবং কুমার সহ গ্যাং সদস্যরা জড়িত। এই খুন নিয়ে নারাগুন্ড থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত আরএসএস ও বজরং দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।