
মুম্বাইয়ের দাদার বাজার এলাকায় মুসলিম হকারদের উপর অশালীন আচরণ ও শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগে নয়জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে শিবাজি পার্ক থানার পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মহিম বিধানসভার বিজেপি নেত্রী অক্ষতা তেন্ডুলকর এবং তার সঙ্গে আরও আটজন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। অভিযোগকারী হকার সৌরভ মিশ্র জানান, অক্ষতা তেন্ডুলকর ও তার সহযোগীরা দাদার রংগোলি স্টোরের বিপরীতে অবস্থিত বাজার এলাকায় এসে উপস্থিত হকারদের ধর্ম পরিচয় জানতে চান।
সৌরভের অভিযোগ, “আমার সহকর্মী সফিয়ান শাহিদ আলিকে তার নাম জিজ্ঞেস করে ধর্ম চিহ্নিত করার পর তাঁকে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। পরে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্তরা তাকে ধাওয়া করে আবারও মারধর করে।”

তবে অভিযুক্ত অক্ষতা তেন্ডুলকর সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তার কথায়, “আমরা পুলিশের কাছে একাধিকবার জানিয়েছি যে এলাকায় জাল ভারতীয় নথি ব্যবহার করে বেশ কিছু বাংলাদেশি ফল ও সবজি বিক্রি করছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই বিষয়ে আমাদের কাছে প্রশ্ন করছেন—BMC এবং পুলিশ কী করছে?”
তিনি আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার আমরা এলাকায় গিয়ে খতিয়ে দেখছিলাম কোথায় কোথায় মুসলিম হকাররা রয়েছেন এবং কীভাবে সমস্যার সমাধান হতে পারে।”
এদিকে মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (জোন ৫) গণেশ গাওয়াড়ে জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (ভারতীয় ন্যায় সংহিতা) ধারা ১৮৯(২), ১৯১(২), ১১৫(২), ৩৫১(২), ৩৫২ এবং মহারাষ্ট্র পুলিশ আইন ৩৭(১), ১৩৫ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বর্তমানে ঘটনার তদন্ত চলছে।

প্রসঙ্গত, এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটল যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় বিভাজন ও অবৈধ অভিবাসীদের ইস্যু ঘিরে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও বৈধতার প্রশ্ন যেমন সামনে আসছে, তেমনি মানবাধিকার ও সংবিধান সম্মত আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।