এনবিটিভি ডেস্ক, ভাঙ্গড়: ভাঙড়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবৈধ অ্যাসিড কারখানায় হানা দিল পুলিশ। আর এই নিয়েই রাজনৈতিক রং লেগেছে ঘটনায়। বিরোধীদের দাবি তৃণমূলের মদতে অবৈধভাবে অ্যাসিড কারখানা চলত ভাঙড়ের বহিরামপুরে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিশ এবং ডিএসপি ক্রাইম তমাল সরকারের নেতৃত্বে ফরেনসিক টিম নিয়ে হানা দেয় ওই অ্যাসিড কারখানায়। হানা দেওয়ার পর ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি অর্থাৎ fsl এর কর্মীরা হতবাক। fsl এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক দেবাশীষ সিনহা দাবি করেন এখানে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে বিভিন্ন রকম এসিড তৈরি হয়। যে কোন মুহূর্তে এই ক্লোরিন গ্যাসের সিলিন্ডার লিক হলে বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কিভাবে এই অ্যাসিড কারখানা চলছে সেই নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনার পর ডিএসপি ক্রাইম তমাল সরকার জানান খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা গিয়ে হানা দেয়। তারপর সেখান থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করছে বৈজ্ঞানিকরা। নমুনা পরীক্ষার পরেই করাকরি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে অ্যাসিড কারখানা চলার পিছনে তৃণমূলের মদত আছে বলে দাবি করেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতা আসলাম ঘরামি। তিনি জানান ভাঙড়ে শুধু অ্যাসিড কারখানা নয়, পাশেই অবৈধভাবে চামড়ার কারখানা চলছে। সবগুলোই তৃণমূল নেতাদের মদতে চলে। প্রশাসন কড়া হাতে ব্যবস্থা নিলে এগুলি সব বন্ধ হয়ে যাবে। দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা বাহারুল ইসলাম দাবি করেন এসবের পিছনে তৃণমূল মদত দেয়না। যদি দলের কেউ এর পিছনে থাকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক তারা সমর্থন করবে বলেও জানায়।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রশাসন সূত্রে খবর দীর্ঘদিন ধরে এখানে এই অ্যাসিড কারখানা চলে আসছে। সোনালী কেমিক্যাল নাম দিয়ে অবৈধভাবে এই কারখানা চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেয়। অবৈধভাবে কারখানা চালানোর জন্য কারখানার এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ভাঙড় থানার পুলিশ। অন্যদিকে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি আধিকারিকরা নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার নিয়ে গেছে। সেখানে ওই নমুনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। অন্যদিকে নলমুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক অনিমেষ হোড় জানান এই ক্লোরিন গ্যাসের যে দুর্গন্ধ এর থেকে মানুষের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এর পাশাপাশি ওই সিলিন্ডার লিক হলে যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পুলিশ কারখানা বন্ধ করে প্রজাপতি দিন্দা নামে এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতকে আজ বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে।