পিএসসি ইন্টারভিউ বোর্ডে সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত মুসলিম চাকরিপ্রার্থীরা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200728-WA0039

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইংরেজি মাধ্যম মডেল মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে পিএসসির বিরুদ্ধে যে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে, তার পিছনে সংখ্যালঘু দফতরের এক আধিকারিক যুক্ত বলে অভিযোগ পড়তে শুরু করেছে। ইন্টারভিউ বোর্ডে সংখ্যালঘু দপ্তর এক গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও,কিভাবে সংখ্যালঘুদের প্রতি বঞ্চনা করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া অস্বচ্ছতা এনে সংখ্যালঘু চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি বঞ্চিত করার চক্রান্তে আধিকারিক ও যুক্ত বলে অভিযোগ সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, পাবলিক সার্ভিস কমিশন যে দপ্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়া চালায়, সেই নিয়োগের ইন্টারভিউ বোর্ডে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একজন আধিকারিক সদস্য হিসেবে যুক্ত থাকেন। সেইমতো এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংখ্যালঘু দফতরের এক আধিকারিক ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তার পরেও ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হলেন সংখ্যালঘুরা। যার সব থেকে বড় উদাহরণ সম্প্রতি প্রকাশিত ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকা। যেখানে একজনও মুসলিম চাকরি প্রার্থীর নাম নেই। চাকরিপ্রার্থীরা এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিকরা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন।
উল্লেখ্য, বাম আমলে শেষ পাঁচ বছরে সংখ্যালঘু উন্নয়নে যাবতীয় প্রকল্পের মধ্যে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা স্থাপন ছিল একটি। সাচার কমিটির রিপোর্ট কে সামনে রেখে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের সামাজিক-অর্থনৈতিক শিক্ষার উন্নয়নের স্বার্থে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন সংখ্যালঘু দপ্তরের মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সবুজ সংকেত নিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়,নতুন এডেড মাদ্রাসা থেকে শুরু করে মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করেন। এর ফলে সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ বাড়ে কয়েকগুণ। সংখ্যালঘু যুবক-যুবতীরা সরকারি চাকরির সুযোগ পান। তেমন ভাবেই আব্দুস সাত্তার সিদ্ধান্ত নেন বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি রাজ্য তৈরি করতে হবে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা। যে মাদ্রাসাগুলি সংখ্যালঘু মর্যাদা প্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই মাদ্রাসাগুলি জন্যই নতুন চাকরির পোস্ট তৈরি হয় তার আমলেই। সেই পোস্টগুলিতে এখন নিয়োগ করছে বর্তমান সরকার। অথচ সেই নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সংখ্যালঘুদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষার উন্নয়নের স্বার্থে আব্দুস সাত্তার যাবতীয় বাধা ও নানাবিধ প্রশ্নের মুখে পড়েও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে সংখ্যালঘুরা।
এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ইংরেজি মাধ্যম থেকে উচ্চ মাধ্যমিক মাদ্রাসা, এমনকি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এই সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে পোস্ট তৈরি করে দিয়ে এসেছিলাম, এই সরকার এখনও তা পূরণ করতে পারেনি। তৃণমূল সরকার ক্ষমতার ৯ বছর পূর্ণ করেছে, অথচ আমার তৈরি করা পোস্ট এখনো পূরণ করতে পারল না। যেখানে নিয়োগ চলছে, সেখানে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠছে। পিএসসির ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এমন অভিযোগ, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগের ক্ষেত্রেও পেয়েছি। আমার 100 দুটি উচ্চমাধ্যমিক মাদ্রাসায় লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ উঠেছে।একইরকমভাবে বীরভূম জেলা সংখ্যালঘু দপ্তর আধিকারিক নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার অভিযোগ সামনে এসেছে। আমার মনে হচ্ছে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে এইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে বর্তমান সরকার।’

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর