ক্বুরবানী কি ও কেন??

ঈদুল আযহা মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম। এটি ঈদ আল-কুরবান বা ঈদ আল-নাহ্র নামেও অভিহিত হয়। ইন্ডিয়াতে এটি কুরবানীর ঈদ, বাকরা ঈদ নামে পরিচিত।

ঈদ ও আযহা দুটিই আরবী শব্দ। ঈদ এর অর্থ উৎসব বা আনন্দ। আযহার অর্থ কুরবানী বা উৎসর্গ করা। হযরত ইবরাহীম (আ.) আল্লাহ তা’লার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে তাঁর (হযরত ইসমাঈলের) পূর্ণ সম্মতিতে কুরবানী করতে উদ্যত হন (৩৭ঃ ১০২, ১০৭)। মক্কার নিকটস্থ ‘‘মীনা’’ নামক স্থানে ৩৮০০ (সৌর) বছর পূর্বে এ মহান কুরবানীর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাঁর ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে তাঁর পুত্রের স্থলে একটি পশু কুরবানী করতে আদেশ দেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্য ও নজিরবিহীন নিষ্ঠার এ মহান ঘটনা অনুক্রমে আজও মীনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানীর রীতি প্রচলিত রয়েছে।

উৎসর্গকৃত পশু, যা’ এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে যাব্হ করা হয়, আত্মীয়-স্বজন বিশেষত দুঃস্থ দরিদ্রজনের মধ্যে যা’ বিতরণ করে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার চেষ্টা চালান হয়, সে সার্থক প্রচেষ্টার যে আত্মিক আনন্দ তাই ঈদুল আযহা নামে অভিহিত হয়। এ দিনে মীনায় হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর অনুপম কুরবানীর অনুসরণে কেবল হাজীদের জন্য নয়, বরং মুসলিম জগতের সর্বত্র সকল সক্ষম মুসলমানদের জন্য এ কুরবানী করা ওয়াজিব (মতান্তরে সুন্নাঃ মুআক্কাদা)।

ঈদুল আযহা ১০ই যু’ল-হিজ্জা, যে দিন পবিত্র হজ্জব্রত পালনকালে হাজীরা মীনা প্রান্তরে কুরবানী করেন এবং তৎপরবর্তী দুই দিনে, মতান্তরে তিন দিনও (আয়্যাম-আল-তাশরীকে) অনুষ্ঠিত হয়।

কুরবানীর পশু নির্ধারিত বয়সের হতে হবে ও কতকগুলি দৈহিক ত্রুটি (কানা, খোঁড়া, কান-কাটা, শিং-ভাঙ্গা, ইত্যাদি) থেকে মুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। ঈদের নামাযের পর থেকে কুরবানীর সময় আরম্ভ হয়। পরবর্তী দুই দিন (মতান্তরে তিন দিন) স্থায়ী থাকে এবং শেষ দিনের সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়।

উট, গরু, মহিষ অনধিক সাত জনের পক্ষে এবং মেষ, ছাগল, দুম্বা শুধু একজনের পক্ষে কুরবানী দেওয়া জায়েয। বাংলাদেশে প্রধানত গরু, ছাগল ও মহিষ কুরবানী দেওয়া হয়। কখনও কখনও আমদানীকৃত স্বল্পসংখ্যক উটও কুরবানী দেওয়া হয়।

যে ব্যক্তি কুরবানী করেন তাঁর নিজেই যাবহ করা সুন্নাহ্। তাঁর পক্ষে অন্য কেহও যাব্হ করতে পারে। যাব্হ করার সময় সাধারণত পড়া হয় পবিত্র কুরআনের দুটি আয়াত- সূরা আনআম-এর ৮০ নম্বর এবং ১৬৩ নম্বর আয়াত। প্রথমটির অর্থ হলঃ ‘‘আমি আমার মুখ করিলাম যিনি আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন তাঁহার প্রতি একনিষ্ঠভাবে এবং আমি মুশরিক নই।’’ দ্বিতীয়টির অর্থ হলঃ ‘‘অবশ্যই আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ, সবই আল্লাহর জন্য যিনি নিখিল বিশ্বের প্রতিপালক, তাঁহার কোনো শরীক নাই।’’ তারপর সাধারণত বলা হয়, ‘‘হে আল্লাহ এ পশু তুমিই দিয়াছ এবং তোমারই জন্য কুরবানী করিতেছি, সুতরাং তুমি ইহা কবুল কর’’, ইত্যাদি। তারপর ‘‘বিছমিল্লাহি আল্লাহু আকবর’’ বলে যাব্হ করা হয়। পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে যে, ‘‘এই কুরবানীর রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, ইহার গোশ্তও না, বরং তাঁহার কাছে পৌঁছায় কেবল তোমাদের তাক্ওয়া’’ (২২ঃ৩৭)। জাহিলিয়্যার যুগে প্রতিমার গায়ে বলির রক্ত-মাখানো হতো এবং গোশ্ত প্রতিমার প্রসাদরূপে বিতরণ করা হতো। ক্ষেত্রবিশেষে নরবলি দেওয়ারও প্রথা ছিল। কুরবানী নরবলির বীভৎস প্রথা চিরতরে বিলুপ্ত করে এবং বলি পশুর রক্ত-মাখানো ও প্রতিমার প্রসাদরূপে বিতরণের প্রথারও মূলোচ্ছেদ করল। একই সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল যে, তাক্ওয়ার চূড়ান্ত অর্থ হলো, প্রয়োজন হলে একজন মু’মিন তাঁর সবকিছু, এমন কি নিজের জীবনটিও, আল্লাহর নামে কুরবানী করতে সর্বদায় প্রস্ত্তত। কারণ ‘‘আল্লাহ মু’মিনের জান-মাল ক্রয় করিয়াছেন জান্নাতের বদলে’’ (৯ঃ১০০)। এ জন্যই কুরআন শরীফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছেঃ ‘‘অনন্তর তোমার প্রতিপালক প্রভুর জন্য নামায পড় এবং কুরবানী কর’’ (১০৮ঃ২)। হাদীস শরীফে এর সুস্পষ্ট বিধান বিদ্যমান।

কুরবানীর পর প্রাপ্ত গোশ্তের তিন ভাগের এক ভাগ মালিক, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বাকি এক ভাগ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এতে দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের দায়িত্ব পালনের একটি সুযোগ ঘটে এবং একই সঙ্গে ধনী দরিদ্রের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। কুরবানীকৃত পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করার বা অন্যকে দান করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু চামড়া, গোশ্ত, হাড্ডি, চর্বি অর্থাৎ নিজ কুরবানীর কোনো কিছু বিক্রী করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ভোগ করার জাইয নয় (হিদায়া, আলমগীরী, শামী)। কুরবানীর পশুর চামড়া বা তার অর্থ দরিদ্রদের কিংবা মাদ্রাসা বা এতীমখানার দরিদ্র ছাত্রদের দান করা হয়।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মুসলমানদের ন্যায় ইন্ডিয়ার মুসলমানেরাও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন। এ সময় মুসলমানরা নতুন পোশাক পরে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি যায় এবং কুশল বিনিময় করে। প্রত্যেক বাড়িতেই উন্নতমানের খাবার প্রস্ত্তত হয়। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও কোথাও কোথাও নিমন্ত্রিত হয়ে এ উৎসবে যোগদান করে। এ উপলক্ষে কয়েকদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। প্রবাসীদের অধিকাংশই নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি গিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ঈদ উদযাপন করে। বিভিন্ন মসজিদ-ময়দানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কয়েকদিন যাবৎ রেডিও-টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয় এবং পত্র-পত্রিকাসমূহে ঈদুল আযহার তাৎপর্য তুলে ধরে মূল্যবান নিবন্ধাদি প্রকাশিত হয়।

হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ (আ.) ও হযরত ইসমাঈল যবিহুল্লাহ (আ.)-এর অতুলনীয় আত্মত্যাগ ও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি অবিচল আনুগত্যের ঘটনাটি বিশ্বসাহিত্যের উপর বিশাল প্রভাব বিস্তার করে। শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য, স্পেন, তুরস্কের ন্যায় মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের সাহিত্যই নয়, ইউরোপের অমুসলিম সাহিত্যেও এর সুস্পষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। সুদূর গ্রীসেও মহাকবি হোমারকে (Homer) এ অসাধারণ আত্মত্যাগের ঘটনা প্রভাবান্বিত করে। বিশ্ববিখ্যাত মহাকাব্য ইলিয়াড (Illiad)-এ বর্ণিত আউলিসে অবরুদ্ধ আগামেমনন (Agamemnon) দেবী ডায়ানাকে (Diana) সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে নিজ কন্যা ইফিজেনিয়া (Iphigenia)-কে বলিদানের সিদ্ধান্ত, শেষ মুহূর্তে ডায়ানা কর্তৃক ইফিজেনিয়ার পরিবর্তে একটি মেষ স্থাপন ও সে মেষের যাবহ, ডায়ানার সন্তুষ্টি লাভ, ইত্যাদি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, মহাকবি হোমার মীনা প্রান্তরে সংঘটিত, কুরবানীর উপ্যাখ্যান দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যেও ঈদুল আযহার বিপুল প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, যার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর রচনা কোরবানী।

কুরবানির_হুকুম:-

অনেক ইসলামিক স্কলারদের মতে, কুরবানি করা সুন্নাত। দলিল হিসেবে হাদিসের বর্ণনা হলো-

হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমরা জিলহজের চাঁদ দেখবে এবং তোমাদের কেউ কুরবানি করার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন চুল, নখ ইত্যাদি কাটা বন্ধ রাখে।’ (মুসলিম)

এ হাদিস ইঙ্গিত করে যে, কুরবানি মানুষের ইচ্চাধীন। ইচ্ছা হলে করবে, না হলে করবে না।

তবে অধিকাংশ হানাফি আলেমদের মতে কুরবানি ওয়াজিব। এ দাবির প্রথম প্রমাণ হচ্ছে কুরআনের নির্দেশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আপনাকে কাউসার দান করেছি, সুতরাং আপনি আপনার রবের জন্য নামাজ পড়ুন এবং কুরবানি করুন।’ (সুরা কাউসার : আয়াত ১-২)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সামর্থ্য থাকার পরও যে ব্যাক্তি কুরবানি করবে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে-কাছেও না আসে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

কুরবানি আদায়ের সময়:-

ঈদের নামাজের আগে কুরবানি করা জায়েজ নয়। যদি কেউ ঈদের নামাজের আগে কুরবানির উদ্দেশ্যে কেনা পশু জবেহ করে তবে তা শুধু জবেহ হিসেবে পরিগণিত হবে। কেননা কুরবানি ঈদের নামাজের পরে আদায় করতে হয়।

– কুরবানির নেসাব:-

কুরবানির দিনগুলোতে যদি কারো কাছে সাড়ে সাত তোলা/ভরি সোনা, অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা/ভরি রূপা, কিংবা সমমূল্যের কোনো নগদ অর্থ, বানিজ্যিক পণ্য, অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্তি জিনিসপত্র থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হয়। এটাই কুরবানির নেসাব। (বাদায়েউস সানাঈ)

সাদকাতুল ফিতর ও জাকাতের নেসাবও একই। অর্থাৎ উল্লেখিত পরিমাণ সম্পদ থাকলে সদকাতুল ফিতর এবং জাকাতও ওয়াজিব হয়। তবে জাকাতের জন্য অতিরিক্ত দুটি শর্ত আছে। প্রথম শর্ত হচ্ছে, সম্পদ বর্ধনশীল হওয়া। আর দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, সেই সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া।

– কুরবানি আদায় হওয়ার শর্ত:-

যে বা যারা কুরবানি করবে, তাদের কুরবানি আদায় বিশুদ্ধ হওয়ার জন্যও ছয়টি শর্ত রয়েছে। যথা-

– নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া। একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কুরবানি করা। যদি কেউ অন্যকে দেখানোর উদ্দেশ্যে, কারো সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার উদ্দেশ্যে অথবা গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে কুরবানি করে, তাহলে তার কুরবানি সহিহ হবে না। (প্রাগুক্ত)

– আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো নিয়ত আছে, এমন ব্যাক্তিকে কুরবানির সঙ্গে শরিক না করা। শরিক কুরবানির ক্ষেত্রে কোনো একজনের নিয়তে সমস্যা থাকলে সবার কুরবানি নষ্ট হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত)

– পশু জবাইয়ের সময় কুরবানির নিয়ত করা। (প্রাগুক্ত)

– কুরবানিদাতা ছাড়া অন্য কেউ পশু জবাই করলে কুরবানি দাতার অনুমতি থাকা। স্পষ্ট মৌখিক অনুমতি না থাকলেও কমপক্ষে অনুমতির ইঙ্গিত থাকা। (প্রাগুক্ত)

– কুরবানির পশু শরিয়তে গ্রহণযোগ্য ও দোষমুক্ত হওয়া। সুতরাং শরিয়ত অনুমোদন করে না, অথবা শরীয়তের দৃষ্টিতে দোষযুক্ত পশু কুরবানি করলে সেই কুরবানি সহীহ হবে না। (প্রাগুক্ত)

– কুরবানি দাতা জবাইয়ের সময় নির্দিষ্ট পশুর মালিক হওয়া। কেউ যদি অন্যের পশু কুরবানির নিয়তে জবাই করে এবং সে যদি খুব কাছের মানুষও হয়, তবুও কুরবানি সহীহ হবে না। (প্রাগুক্ত)

কুরবানির পশুর বয়স:-

এক হাদিসে এসেছে, হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কুরবানিতে তোমরা শুধু পরিপূর্ণ বয়সের পশু জবাই কর। তবে যদি পূর্ণ বয়সের পশু যোগাড় করতে তোমাদের কষ্ট হয়, তাহলে ছয় মাস বয়সের দুম্বা জবাই কর।’ (আবু দাউদ)

হাদিসে ‘মুসিন্নাহ’ পশু জবেহ করার কথা বলা হয়। মুসিন্নাহ বলা হয় ঐ পশুকে, যে পশুর দাঁত উঠেছে। ফোকাহায়ে কেরাম কুরবানির পশু উপযুক্ত হওয়ার জন্য বয়সের একটি সীমা বর্ণনা করে দিয়েছেন। তাহলো-

– উট : ৫ বছর।

– গরু/মহিষ : ২ বছর।

– ছাগল/ভেড়া/দুম্বা : ১ বছর। (দুররুল মুখতার)

লেখক- আসমত আলি, দেগঙ্গা

Latest articles

Related articles