
পুরুলিয়া: বসন্ত উৎসবের আমেজে মুখরিত ছিল পুরুলিয়া জঙ্গলমহল। দোল ও হোলির ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল এই অঞ্চল। শান্তিনিকেতনের পলাশ উৎসবের সমান্তরালে পুরুলিয়ার রঙিন উৎসবও পর্যটকদের মূল আকর্ষণে পরিণত হয়। গতবারের সকল রেকর্ড ভেঙে এ বছর জেলায় মদ বিক্রিতে সরকারি রাজস্বে লক্ষণীয় বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে।
২০২৪ সালের দোল-হোলিতে জেলায় বিয়ার, বিদেশি মদ ও দেশি মদের বিক্রি থেকে সরকার প্রায় ৮ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছিল। এবার সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটিরও বেশি, যা গত বছরের তুলনায় ২৩.২১% বেশি। পুরুলিয়া আবগারি দপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট অর্ণব সেনগুপ্ত জানান, “রঙের উৎসবে এবার মদ বিক্রির হিসাবে রেকর্ড ভাঙা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে। সরকারের কোষাগারে গত বছরের চেয়ে ২৩% বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।”

স্থানীয় ফরেন লিকার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহিত লাটা উল্লেখ করেন, “পুরুলিয়ায় সাধারণত দুর্গাপুজোতেই মদ বিক্রির সর্বোচ্চ রেকর্ড থাকে। কিন্তু এবার দোল-হোলির বিক্রি তার কাছাকাছি পৌঁছেছে। শহরের ব্যস্ত মদ বিক্রেতাদের কাউন্টার থেকে দুর্গাপুজোয় দৈনিক সাড়ে ৪ লাখ টাকার মদ বিক্রি হয়। এবার দোল-হোলিতেও একই চিত্র দেখা গেছে।”
আবগারি দপ্তরের কর্তাদের মতে, শুধু স্থানীয়দের চাহিদাই নয়, অযোধ্যা পাহাড়সহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বিপুল সংখ্যক ভ্রমণকারীর আগমন মদ বিক্রি বাড়ার মূল কারণ। রঙের উৎসব উপলক্ষে পলাশ ফুলের শোভা দেখতে আসা পর্যটকদের মধ্যে মদের চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়ে অর্ণব সেনগুপ্ত যোগ করেন, “মদ বিক্রির এই অপ্রত্যাশিত উত্থান আমাদের কিছুটা আশ্চর্য করেছে। তবে পর্যটকদের ভিড়ই এখানে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।”

ঐতিহ্যগতভাবে দুর্গাপুজোয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আসলেও, এবার বসন্ত উৎসব তার সমকক্ষ হয়ে উঠেছে। পর্যটন ও উৎসবের সম্মিলিত প্রভাবে পুরুলিয়া জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মদ বিক্রি একটি উল্লেখযোগ্য মাত্রা যোগ করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।