বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারসহ বিধায়ক, মন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি আমলারা দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মচারীর বেতন আটকে রয়েছে। এতে ৩ লাখ আঞ্চলিক কর্মী, ৫ লাখ শিক্ষক এবং ৫০ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মীর ডিসেম্বর ও জানুয়ারির বেতন এখনও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়নি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরাও বেতন পাননি।
গত ৩ জানুয়ারি বিহার সরকার “CFMS 2.0” নামে একটি নতুন কমপ্রিহেনসিভ ফিন্যানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করেছিল। তবে, সফটওয়্যারটি চালু হওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে পুরো বেতন বিতরণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। পুরনো ব্যবস্থার সব তথ্য নতুন সিস্টেমে স্থানান্তরের সময় ত্রুটির সৃষ্টি হওয়ার ফলে বেতন পেমেন্টে বিলম্ব হয়েছে।
রাজ্য অর্থ দফতরের তথ্য অনুসারে, প্রতি মাসে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ব্যয় হয় সরকারি কর্মচারীদের বেতন প্রদানের জন্য। এই পরিস্থিতিতে, একটুখানি টাকাও কর্মচারীদের অ্যাকাউন্টে ঢোকার আগেই সময় পার হয়ে গেছে, যা কর্মচারীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও হতাশার সৃষ্টি করছে। তারা জানেন না কখন তারা বেতন পাবেন।
উপমুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী গত ২৭ ডিসেম্বর পূর্বাভাস করেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে, তবে দুই মাস পার হয়ে গেলেও কোনো কার্যকর সমাধান আসেনি। শুধু বেতনই নয়, বিভিন্ন সরকারি বিল পেমেন্টও এই সিস্টেমের ত্রুটির কারণে আটকে রয়েছে।
বিহারের নতুন CFMS 2.0 সফটওয়্যারের কারণে বিহারের সরকারি কর্মচারীদের বেতন বিতরণে গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল সরকারি কর্মকর্তার বেতন দুই মাস ধরে আটকে থাকার কারণে কর্মচারীদের আর্থিক ও মানসিক সমস্যা বাড়ছে। সরকারের ব্যয় হওয়া বিশাল পরিমাণ টাকার পাশাপাশি এই সমস্যার কারণে সরকারি যাবতীয় বিল পেমেন্টেও প্রভাব পড়েছে।
প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং ডেটা স্থানান্তরের সমস্যার কারণে বিহার সরকারী কর্মচারীদের বেতন বিতরণে মারাত্মক বিলম্ব দেখা দিয়েছে, যা সরকারের কার্যকারিতায় বিশ্বাসঘাতকতার প্রশ্ন তোলে।