নিউজ ডেস্ক : রাজ্য রাজনীতিতে গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ লক্ষ করলে ভালই বোঝা যাচ্ছে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিছু বেশ কিছু নেতা। এদের মধ্যে আছেন মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায় এবং সৌমিত্র খানের নাম ও। বিজেপির তরফ থেকে ও স্বীকার করা হচ্ছে কিছু নেতা যাবে তাদের দল থেকে। এই পরিস্থিতিতে আচমকা রবিবার বিকেলে মুকুল রায়ের (Mukul Roy) বাড়িতে হাজির হলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। সাম্প্রতিক ঘটনার ঘনঘটায় মুকুল-সৌমিত্র মোলাকাত নিয়ে জোর শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও জল্পনা এড়াতে সৌমিত্র খাঁ বলেন,”মুকুলদার কাছে রাজনীতিতে হাতে খড়ি হয়েছে আমার। আজকের সম্পর্ক নয়।”
বিষ্ণুপুরে দিলীপ ঘোষের ডাকা সাংগঠনিক বৈঠকে অংশ নেননি সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। কিন্তু যে লক ডাউনের দোহাই দিয়ে তিনি দিলীপের ডাকা বৈঠকে যাননি বলে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন সেই লক ডাউনের মাঝেই সৌমিত্র হাজির হলেন সল্টলেকের বিডি ব্লকে মুকুলের বাড়িতে। তখন সেখানে ছিলেন মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়ও। বেশ খানিকক্ষণ থাকার পর বেরিয়ে এসে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ জানান,”মুকুল’দার সঙ্গে আজকের সম্পর্ক নয়। ওঁর কাছে রাজনীতিতে হাতে খড়ি। কাকিমার শরীর খারাপ। খোঁজ খবর নিতে এলাম। মুকুল রায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনাও করেছি।”
শুধুই কি মুকুল পত্নী কাকিমার খোঁজ নিতে ‘রাজনৈতিক গুরু’ মুকুল রায়ের (Mukul Roy) বাড়ি গিয়েছিলেন সৌমিত্র (Saumitra Khan)? গত কয়েকদিনের ঘটনাক্রমে নজর রাখলেই বোঝা যাবে কেন এই প্রশ্ন উঠছে। দিন কয়েক আগে ফেসবুকে দলকে আত্মসমালোচনা পাঠ দিয়ে বেসুরো বেজেছিলেন বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়। গত সপ্তাহেই করোনায় আক্রান্ত মুকুল-জায়া কৃষ্ণা রায়কে দেখতে হাসপাতালে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পরে ওই রাতেই মুকুলের স্ত্রীকে দেখতে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। অভিষেকের এমন সৌজন্যের প্রশংসা শোনা গিয়েছে শুভ্রাংশুর মুখে। সেখানে দিলীপ ও মুকুলের মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, দুই নেতার মাঝে ‘অল ইজ নট ওয়েল।’
মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে এসেছেন সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। তিনিও এখন খবরে। ছেড়েছেন দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। রাজ্য সভাপতির বৈঠকে থেকেছেন অনুপস্থিত। এসব বিতর্কের মাঝে এ দিন মুকুলের বাড়িতে হাজির হলেন সৌমিত্র। নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ নাকি জল অনেক দূর গড়িয়েছে? যদিও তৃণমূলে ঢোকার রাস্তা এখন দূরহ হওয়ায় সাবধানী সৌমিত্র এ দিন তিনি বলেন,”আমি ভারতীয় জনতা পার্টির একজন দায়িত্বশীল নেতা। দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া বা ছাড়ার কোনও মানসিকতাই নেই। বিজেপিতে আমি খুব ভালো নিঃশ্বাস নিতে পারছি। যাঁদের দমবন্ধ হচ্ছে তাঁদের আলাদা ব্যাপার।” তবে রাজনৈতিক মহলের মত বেসুরো নেতারা তৃণমূল কংগ্রেসকে এই সব ঘটনার মাধ্যমে তাদের প্রত্যাবর্তনের একটা ইঙ্গিত দিতে চাইছেন বিজেপিকে না চটিয়ে। তবে কত দিন তৃণমূল কংগ্রেস তাদের পূর্বের নেতাদের ফিরিয়ে নিতে অপেক্ষা করায় সেটাই এখন দেখার।