নিউজ ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ন্যাটো সেনাদের সঙ্গে তুরস্কের সেনাদের ও আফগানিস্থান ছাড়তে হবে। জানিয়েছে দ্রুত কাবুল দখলের পথে ধাবমান তালিবান। মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার পর, কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার প্রস্তাব দেয় তুরস্ক। এই ব্যাপারে সায় দেয় আমেরিকা এবং অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলো। তবে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান।
বৃহস্পতিবার দোহাভিত্তিক তালেবান এক মুখপাত্র সুহেল শাহীন বলেছেন, ২০ বছর ধরে তুরস্ক ন্যাটোর অংশ ছিলো। ফলে, আমেরিকার সাথে ২০২০ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি হওয়া চুক্তি মোতাবেক, তুরস্কের সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়তে হবে। তুরস্ক একটি ইসলামী দেশ। আফগানিস্তানের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে তুরস্কের। ভবিষ্যতে যখন আমরা নতুন ইসলামী সরকার গঠন করবো, তখন তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ ও ভালো সম্পর্কের প্রত্যাশা করি।
তুর্কি এক কর্মকর্তা জানান, তুরস্ক ও আমেরিকার কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। ওয়াশিংটন কিছু বিষয়ে রাজি হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর, তুরস্কের তরফ থেকে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেয়া হয়। ন্যাটো ও আমেরিকার সাথে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তুর্কি সরকার এজন্যে শর্তারোপ করছে – যা আগামী সপ্তাহে দু দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে সমাধান হতে পারে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর, পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমেরিকা ও তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকারের সাথে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন।
২০২০ সালে ট্রাম্পের আমলে আমেরিকা ও তালেবানের মাঝে হওয়া আফগানিস্থান শান্তি চুক্তি অনুসারে বিদেশি সেনাদের আফগানিস্থান ছাড়ার কথা ১ লা মের মধ্যে। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন প্রথমে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাজি না হলেও পরে তালিবানের হুমকির সামনে আগামী ৯/১১ তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের ব্যাপক অঞ্চল দখলে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশী সেনাদের আফগানিস্থান ত্যাগ করার পর, তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নেবে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, আফগানিস্তানের ৫০ থেকে ৭০% এলাকা এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রনে। কাবুল থেকে মাত্র ৩০ কিঃমিঃ দূরে রয়েছে তারা। ব্যাপারটিতে ইতিমধ্যেই আমেরিকা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। কাবুলের পতন হলে আমেরিকা আবার সেনা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।