মুর্শিদাবাদ: রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত গদাই পুর গ্রাম আর এই গ্রামেরই ব্যানার্জি পরিবারের আদি পুজো মা পেটকাটি নামে খ্যাত সারা মুর্শিদাবাদ জুড়ে ।এই পুজো প্রায় ৫০০ বছর অতিক্রম করেছে। ব্যানার্জি পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান এই পেটকাটি নামটি উঠে এসেছে ৫০০ বছর আগেই। কেন এই পেটকাটি নাম প্রশ্ন করতেই তারা বলেন বহু বছর আগে এই মায়ের পুজো হত তখন বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ আসতেন তাঁদের নানা রকম সমস্যার কথা নিয়ে। বহু মানুষ মানত করতেন, পাঁঠা-মোষ ইত্যাদি বলিও হতো। কিন্তু তাদের বাড়িতে গোপালের পুজো হওয়ার কারণে তারা বলি প্রথা বন্ধ করে দেন।
আর তারপরেই ঘটে অলৌকিক ঘটনা একদিন সন্ধ্যেবেলা মন্দিরের সেবায়েতের মেয়ে সন্ধ্যা দিতে গিয়েছিল ওই মন্দিরে। তখনই মা দুর্গা তাকে ভক্ষণ করেন বলে শোনা যায়। সারা রাত্রি মেয়েটিকে খোঁজাখুঁজি করে সেবায়েত ও ব্যানার্জি পরিবারের লোকজন। ভোরবেলা তাদেরকে স্বপ্নে দেখা দেন মা দুর্গা। তিনি বলেন তাদের মেয়েকে তিনি ভক্ষণ করেছেন। যদি তাদের মেয়েকে ফেরত চায় তাহলে পুনরায় বলি আরম্ভ করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে তারা মন্দিরের দিকে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন মা দুর্গার মুখে মেয়েটির জামার ফিতে দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে গ্রামবাসীরা ও ব্যানার্জি পরিবারের লোকজন কাতর মিনতি করেন যে তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। মা যা বলবে সেই কথা অনুযায়ী চলবে।
তারপরই মা দুর্গার নির্দেশ অনুযায়ী মায়ের পেট কেটে বের করা হয় ওই মেয়েটিকে। আর তখন থেকেই দুর্গা মায়ের নাম হয় মা পেটকাটি।
আগের বছর করুণা মহামারীর কারণে প্রশাসনিক নিয়ম থাকলেও পুজোতে সেরকমভাবে ভক্তদের আটকানো সম্ভব হয়নি। চোখে পড়ার মতন ভিড় জমে প্রত্যেক বছর। এ বছরও পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যানার্জি পরিবার জানান, সরকারি বিধি নিষেধ মেনে পুজোর আয়োজন হচ্ছে, কিন্তু কতটা পারবেন তারা ভক্তদের ভিড় এড়তে এই নিয়েই চিন্তিত আছেন তারা। বহু দূরদূরান্ত থেকে আসেন মায়ের ভক্তরা। প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। যদিও বা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তারা প্রত্যেকবছর, তবুও দর্শনার্থীদের ভিড় কমানো সম্ভব হয় না। মুর্শিদাবাদের সবথেকে বড় পূজা নামে জানা যায় এই পেটকাটি মায়ের পুজো।