মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রতি সতর্কতা ও শিষ্টাচারের বার্তা জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সম্প্রতি একটি নির্দেশ জারি করেছে। নির্দেশমতে, সকল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার পূর্বে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ১৪ দফার শপথ বাক্য পাঠ করানো হবে। এই শপথ বাক্যে পরীক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করবেন, তারা পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা কোনো বৈদ্যুতিন যন্ত্রপত্র, এমনকি অভিভাবককে নিয়ে যাবেন না এবং পরীক্ষায় অন্যায় উপায় অবলম্বন করে ভাল নম্বর অর্জনের চেষ্টা করবেন না।
শপথ বাক্যের মূল বিষয়াবলী
বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি নিষিদ্ধ: পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, বা কোনো ধরণের বৈদ্যুতিন ডিভাইস সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই।
অন্যায় উপায় গ্রহণে বিরতি: পরীক্ষায় সঠিক এবং ন্যায়পরায়ণ উপায়ে অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল অর্জনের অঙ্গীকার করা হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্র এবং অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ: অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহের সময় ও পরীক্ষার পূর্বের মুহূর্তে এই শপথ বাক্য পাঠ করানো হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতার বীজ বপন হয়।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সেক্রেটারি সুব্রত ঘোষ বলেন, “পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা সবরকম প্রচার ও ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছি।” এ পর্যন্ত সমাজ মাধ্যম, টেস্ট পেপার ইত্যাদির মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, তবে এবার সরাসরি বিদ্যালয়ের মাঠে শপথ বাক্য পাঠ করানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে আদর্শ ও নৈতিকতার বোধ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যাশিত প্রভাব
সচেতনতা বৃদ্ধি: সরাসরি শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে পরীক্ষার নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও সঠিক আচরণের বার্তা স্পষ্টভাবে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
পরীক্ষা পরিবেশে শৃঙ্খলা: মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা পরীক্ষাকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ও মনোযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
সঠিক মূল্যায়ন: অন্যায় উপায়ে নম্বর বাড়ানোর প্রচেষ্টা প্রতিহত করে, প্রকৃত মেধা ও পরিশ্রমের ভিত্তিতে ফলাফল নির্ধারণের প্রচেষ্টা উৎসাহিত হবে।
এই শপথ বাক্য পাঠের উদ্যোগটি কেবলমাত্র একটি নিয়মাবলী আর বিধিনিষেধের রীতি নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের নৈতিক চেতনা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আশা করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে পরীক্ষার দিন থেকে শুরু করে, ছাত্র-ছাত্রীদের আচরণে ও মনোভাবেই ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সততা ও শুদ্ধাচারের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।