আজ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ৪২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

received_165220211983748

 

জালিস মাহমুদ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ

আজ ২২ নভেম্বর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার মধ্যবর্তী নিভৃত দুটি গ্রাম শান্তিডাঙা-দুলালপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপিঠটি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুষ্টিয়া – খুলনা মহাসড়কের পাশে কুষ্টিয়ায় নিভৃত পল্লীতে সবুজ শ্যামলে ঘেরা প্রাকৃতিক এক অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত পরিবেশে অবস্হিত ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় আজ থেকে ৪২ বছর আগে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই থেকে হাটি হাটি পা পা করে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠের মর্যাদা লাভ করেছে । বলা যেতে পারে সুদীর্ঘ ৪২ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ পুর্ণ যৌবন লাভ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা প্রতিকুল পরিস্হিতি মোকাবেলা এবং বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্হানে আসতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। জাতীয় সংসদে ১৯৮০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৮০ (৩৭) পাস হয়।

বাংলাদেশে একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেটা এক স্হানে প্রতিষ্ঠিত হবার পর একাধিকবার স্হান পরিবর্তিত হয়ে আবার পুর্বের স্হানে ফিরে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) র আর্থিক সহযোগিতায় ১৯৭৯ সালে প্রথম কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে ওআইসি সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপে ও দেশের আলেম উলামাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এরশাদ সরকার সেটিকে রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে গাজীপুরে ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বোর্ড বাজারে স্হানান্তর করে। গাজীপুরে তখন সুরম্য ও নান্দনিক অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে গাজীপুরস্হ ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুরস্হ সাবেক ক্যাম্পাসটিতে বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

গাজীপুর চারটি বিভাগে ৩০০ জন ছাত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে কুষ্টিয়ায় ৮ টি অনুষদ, ৩৪ টি বিভাগ, ১ টি ইনস্টিটিউট, ১৬ হাজার শিক্ষার্থী এবং সাড়ে চার’শ শিক্ষক নিয়ে এক বিরাট পরিবারে পরিণত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।

১৯৮৫-৮৬ শিক্ষা বর্ষে প্রথম হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, কোরআন ও তাওহীদ বিভাগে ৭৫ জন করে মোট ৩০০ জন ছাত্র ভর্তি করা হয়েছিল (তখন কোন ছাত্রী ভর্তি করা হয়নি)। ভর্তি ক্ষেত্রে হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৫০% ভর্তি করা হয় কলেজ ছাত্র বাকি ৫০% ছাত্র ভর্তি করা হয় মাদরাসার। কোরআন ও তাফসীর বিভাগে ১০০% ছাত্র ভর্তি করা হয় মাদরাসা থেকে।

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্নে বেশ কিছু অদ্ভুত নিয়ম কানুন চালু ছিল। যেমন কোন অনুষ্ঠানে হাতে তালি দেওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এর পরিবর্তে আরবীতে মারহাবা বলার ফরমান জারি করা হয়। বাধ্যতামুলক ১০০ নাম্বারের আরবী পড়তে হতো। আবাসিক ছাত্রদের প্রতিদিন এশার নামাজের পর হাজিরা নেওয়া হতো। ভর্তির সময় ভর্তি ফরমের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনীতি সাথে জড়িত হওয়া যাবেনা এই মর্মে মুচলেকা নেওয়া হতো।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ায় স্থানান্তরের পর তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়টিকে প্রকৃত অর্থে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর