পশ্চিমা বিশ্বের ত্রাস সালাউদ্দিন আইয়ুবীকে নিয়ে সিরিজ তৈরি করবে তুরস্ক এবং পাকিস্তান

 

 

খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদে নেতৃত্ব দিয়ে ও তাদের হাত থেকে জেরুজালেমকে দখলমুক্ত করে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছেন সুলতান সালাহউদ্দিন আল-আইয়ুবী। এবার মহান এই সমর নায়কের জীবনী নিয়ে একটি টেলিভিশন সিরিজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে তুরস্ক এবং পাকিস্তান।

পাকিস্তানের আনসারী অ্যান্ড শাহ ফিল্মসের প্রকল্প প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে, তুরস্কের আকলি ফিল্মসের মালিক প্রযোজক এমরে কোনুক শনিবার ঘোষণা করেছেন যে, তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর পরে এক টুইট বার্তায় কোনুক বলেন, ‘পবিত্র শুক্রবার রাতে একটি সুখবর! সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীকে নিয়ে টেলিভিশন সিরিজ নির্মাণে আকলি ফিল্মস এবং আনসারী অ্যান্ড শাহ ফিল্মের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যৌথ প্রকল্পটি ‘আমাদের দেশ এবং আমাদের শিল্প জগতের জন্য উপকারী’।

তুরস্ক এবং পাকিস্তানের অভিনেতাদের সমন্বিত এই সিরিজটি তুরস্কে শুটিং করা হবে এবং তিনটি সেশনে প্রচার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কনুক বলেন, ‘এই মহান ব্যক্তি যিনি ইতিহাসে এবং সারা বিশ্বে তার ছাপ রেখে গেছেন’, তাকে নিয়ে চিত্রায়নে অসুবিধা সম্পর্কে সচেতন হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে পেরে খুশি।

উল্লেখ্য, আবু-নাসির সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব ১১৩৭/১১৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মিশর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। পাশ্চাত্যে তিনি সালাদিন বলে পরিচিত। তিনি কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর লোক ছিলেন।লেভান্টে ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তিনি মুসলিম প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেন। ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে তার সালতানাত মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সালাহউদ্দিনের ব্যক্তিগত নেতৃত্বে আইয়ুবী সেনারা ১১৮৭ সালে হাত্তিনের যুদ্ধে ক্রুসেডারদের পরাজিত করে। এর ফলে মুসলিমদের জন্য ক্রুসেডারদের কাছ থেকে ফিলিস্তিন জয় করা সহজ হয়ে যায়। এর ৮৮ বছর আগে ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিন দখল করে নেয়। ক্রুসেডার ফিলিস্তিন রাজ্য এরপর কিছুকাল বজায় থাকলেও হাত্তিনের পরাজয় এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাথে ক্রুসেডার সংঘাতের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ১১৮৭ সালের ২ অক্টোবর শুক্রবার তার সেনাবাহিনী সংক্ষিপ্ত অবরোধের পর জেরুজালেম জয় করে। সালাহউদ্দীন ছিলেন মুসলিম, আরব, তুর্কি ও কুর্দি সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ১১৯৩ সালের ৪ মার্চ তিনি দামেস্কে মৃত্যুবরণ করেন। তার অধিকাংশ সম্পদ তিনি তার প্রজাদের দান করে যান। উমাইয়া মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

সূত্র : ডেইলি ইনকিলাব

Latest articles

Related articles