সাইফুল্লা লস্কর : ২০২৭ সালের মধ্যে চাঁদে আমেরিকা তৈরি করবে একটি পারমাণবিক চুল্লি। ট্রাম্প সরকারের পরিকল্পনা চাঁদে একটি মহাকাশ গবেষণা এবং উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরি করা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী সেই উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং গবেষণা কেন্দ্রের শক্তি সরবরাহের জন্য আমেরিকা তৈরি করবে একটি বিশাল পারমাণবিক চুল্লি। কিন্তু চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আমেরিকা পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহকে সামরিকিকরণ ও পরবর্তীতে দখলের উদ্দেশ্যে সেখানে পারমাণবিক অস্ত্রও তৈরি করবে।
আমেরিকার কংগ্রেস ইতিমধ্যে নাসার পরিকল্পিত এই মিশনের জন্য ১.৬ বিলীয়ন ডলার অনুমোদন করেছে। পৃথিবীর তুলনায় চাঁদ থেকে যেকোনো মহাকাশ মিশন উৎক্ষেপণ করা সহজ হবে চাঁদের মুক্তি বেগ পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম হওয়ার কারণে। আমেরিকা ২০২৭ এর মধ্যে চাঁদে এমন একটি উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরি করবে যেখানে স্থায়ী ভাবে বেশ কিছু মহাকাশচারী বসবাস করতে পারবে গবেষণার উদ্দেশ্যে কৃত্রিমভাবে তৈরি তাঁবুতে। তাদের চন্দ্র পরিভ্রমণের জন্য থাকবে এক ধরনের গাড়ি। আর এই সব কিছুর জন্য প্রয়োজন হবে অনেক বিদ্যুৎ শক্তি। কিন্তু চাঁদে জীবাশ্ম জ্বালানি পাওয়া যায়না। পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় না সৌর শক্তিও তাই এই ভরসা পারমাণবিক বিদ্যুৎ। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে তারা এস পি ডি – ৬ বা স্পেস পলিসি ডাইরেক্তিভ ৬ এর অনুমোদন দিয়েছে।
তবে বিভিন্ন মহাকাশ গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন এই পারমাণবিক চুল্লি অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে পৃথিবীর যেকোনো চুল্লির তুলনায়। কারণ চাঁদে উল্কা পিণ্ডের মতো মহাজাগতিক বস্তুসমূহ পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি হারে পতিত হয়। আবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন সুরক্ষা আবরণ থাকায় সেই সব মহাজাগতিক বস্তুগুলো পৃথিবীর তেমন কোনো বিশেষ ক্ষতি করতে পারে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা বায়ুমণ্ডলে ধ্বংস প্রাপ্ত হয়ে যায় কিন্তু চাঁদে যেহেতু বায়ুমণ্ডল নেই তাই এই সব বৃহৎ মহাজাগতিক বস্তুগুলোর কোনো একটি পারমাণবিক চুল্লিতে আঘাত হানলে ঘটতে পারে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা যার মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীর ওপর। কিন্তু আপাতত সেরকম কোনো সুরক্ষা ব্যাবস্থা মার্কিন গবেষণা সংস্থা তৈরি করতে পেরেছে কিনা সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
অবশ্য অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ২০ ই জানুয়ারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলা জো বাইডেন বাতিল করে দিতে পারেন। যখন আমেরিকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় অনেক বেশি প্রয়োজন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দরকার অনেক বেশি অর্থিক বরাদ্দ সেই সময় এই বিশাল খরচ চাঁদে পারিমাবিক চুল্লি তৈরির জন্য তিনি তা কিভাবে নেবেন সেটাই এখন দেখার।