
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হওয়া দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু ধর্মগুরুর অতীত নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। যাঁদের একজন রোমারু এবং অপরজন জগির—উভয়ের বিরুদ্ধে অতীতে ধর্মীয় কট্টরপন্থা ও সহিংসতায় উস্কানির অভিযোগ রয়েছে।
এই দুই ব্যক্তি ভারতের হিন্দু প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলির ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তাঁদের অতীত কর্মকাণ্ড ঘিরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষত, তাঁদের একজন ইসলামবিদ্বেষী বক্তৃতা এবং পাকিস্তানবিরোধী উগ্র মনোভাবের জন্য একাধিকবার সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে রোমারু ইসলাম ধর্ম ছেড়ে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং পরে রাম মন্দির আন্দোলনের পক্ষে সরব হয়ে ওঠেন। এরপর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা করে তিনি হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনগুলির পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। ২০১৫ সালে আইন অমান্য করে এক ধর্মীয় শোভাযাত্রা আয়োজনের দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাবন্দি করা হয়। প্রায় দুই বছর পর ২০১৭ সালে তিনি মুক্তি পান।
অন্যদিকে জগির, যিনি নিজেকে ‘হিন্দু আত্মিক নেতা’ বলে পরিচয় দেন, অতীতে একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন। ২০০০ সালে আমেরিকায় বসবাস শুরু করার পর তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক গঠনের প্রয়াসেও ছিলেন সক্রিয়। হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন বৈঠকে তাঁকে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে দেখা গেছে বলেও সূত্রের দাবি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ট্রাম্পের উপদেষ্টা পরিষদে এই দুই ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি মার্কিন প্রশাসনের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন সৃষ্টি করছে। বিশেষত, মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অতীতে তাঁদের অবস্থান বর্তমান সময়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে হিন্দু ভোট টানার লক্ষ্যে ট্রাম্প শিবির এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এটি তাঁর রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হলেও, এতে মার্কিন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।