
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক খবর অনুযায়ী, যোগেশ চন্দ্র কলেজে মুসলমানরা পুজো করতে দিচ্ছে না – এটাই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে জমজমাট বিষয় হয়ে উঠেছে।
তবে আসলে কি ঘটে ছিল? কলেজের বিল্ডিংটি একটাই হলেও, সেখানে একই ছাদে ডে কলেজ ও ইভিনিং কলেজের ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। আসল বিষয় হলো, দুইটি দলের মধ্যে পুজোর রাশ নিয়ে মতবিরোধ।
এক দলের শীর্ষে রয়েছেন তৃণমূল নেতা সাব্বির আলী, যিনি অভিযোগ অনুযায়ী অপর দলের সদস্যদের হু–মকি দিয়ে বলেছেন যে, পুজোর রাশ তাদের হাতে রাখবেন। ফলে, পুজোর আসল নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে – এ নিয়ে উভয় দলের মধ্যেই সংঘর্ষের সূচনা হয়েছে।
তবে এখানে মুখ্য বিষয় হচ্ছে, ঘটনাটিকে একেবারেই ‘মুসলমানরা পুজো করতে দিচ্ছে না’ এমন এক সমগ্র সাম্প্রদায়িক দাবায় রূপ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় উৎসবের সুযোগ অস্বীকার করার মতো ব্যাপার নয়, বরং দুই দলের পুজোর জায়গা নিয়ে রাজনৈতিক অদলবদলের পালা।
অনেক বিচক্ষণ ব্যক্তিকে, এবং কিছু মিডিয়াকেও, এই কৌশলে বিষয়টিকে ধর্মীয় বিভাজনের মোড়কে আনা হয়েছে। সাব্বির আলীর ধর্মীয় পরিচয়কে পুঁজি করে ও তা ব্যবহার করে বিদ্বেষ বিক্রি করার প্রচেষ্টা চলছে। এর ফলে, দুইটি শক্তি – রাজনৈতিক ও ধর্মীয় – উভয়ই নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে সাধারণ জনগণকে বিভাজিত করে তুলতে চাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে বার্তা থাকা জরুরি যে, বাস্তব ঘটনা এবং সাম্প্রদায়িক ন্যারেটিভের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শুধু ধর্মের নামে হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ তৈরি করে ভোটের ব্যাংক বাড়ানোর খেলায় মেতে ওঠা রাজনৈতিক গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদরা প্রকৃত ইস্যু থেকে আমাদের চোখ সরাতেই এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করছে।
সতর্ক থাকুন, বিষয়টি গভীরে খুঁজে দেখুন এবং বুঝতে চেষ্টা করুন—এটি শুধুমাত্র দুই দলের পুজোর জায়গা নিয়ে বিবাদ, যা কৌশলে ধর্মীয় বিভাজনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। বাস্তব ঘটনা বুঝে, রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই সময়ের দাবি।