গাজী সালাহউদ্দীন। স্টাফ রিপোর্টার।
মানুষের জীবনাবসানের চরম নিষ্ঠুরতম ভাগ্য নিয়ে এ দুনিয়াতে আসে।কেউ দুনিয়াকে হাসিয়ে চলে যায় আবার কেউ দুনিয়াকে কাঁদিয়ে চলে যায়। তেমন ভাবেই দুনিয়াকে কাঁদিয়ে চলে গেছে কয়রার ছোট হুজুর নামে পরিচিত আলহাজ্ব মাও. নূর মুহাম্মদ। পৃথিবীতে যেন এমন মানুষ হাজারে একজন আসে। মাও. নূর মুহাম্মাদ ২২তারিখ রাত ০৩.৩০মিনিটে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন। তা নিয়ে নিউজ হলেও অনেকে জানেন না নূর মুহাম্মাদ আসলে কে?। এ প্রশ্নের জবাব দিতে কলম যেন ব্যাকুলতার অস্বস্তি প্রকাশ করতেছে। এ নূর মুহাম্মাদ আসলেই প্রিন্সিপাল নূর মুহাম্মাদ ছিলনা। তিনি তাঁর পড়াশোনা শেষ করে নেমে পড়েন ব্যতিক্রমধর্মী পেশায়। সুন্দরবনের কাঠ অবৈধ ভাবে কেটে বিক্রি করে হয়ে যান কাঁচা টাকার মালিক। কিন্তু যৌবনের বিবাহ নামক অধ্যায় টা তার জীবনকে পরিবর্তন করে দেয় একটা উসিলা হয়ে। তিনি বিয়ে করেন দক্ষিন খুলনার আলেম কুল শিরোমণি হজরত মাও. বোরহান উদ্দিন (রহ.) এর ২য় কন্যা ফরিদা বেগম কে। অসম্ভব রূপসী, ধার্মিক আর পিতার আদর্শে বলিয়ান এই ফরিদা বেগম তার স্বামীকে ভালোবাসা আর পিতার আদর্শের শিক্ষা দিয়ে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে থাকেন। এরমধ্যেই তারই পিতা বোরহান উদ্দিন রহ. দ্বিনের খেদমতে হাজির হন খুলনার দক্ষিণাংশে। মেয়ের বাসা খুব বেশি দূরে ছিলো না।কিন্তু জামাইয়ের এমন ইনকামের টাকা তার মন কে ফিরিয়ে নেয়।আদরের মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে পা রাখেননি এই আল্লাহর খাদেম। এটা শুনে নূর মুহাম্মাদ তার পুরোনো ছারছীনা হুজুরের দেওয়া শিক্ষা আর নিজের শশুরের এমন ক্ষোভের কথা শুনে নিজেকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। আর অশিক্ষিত সমাজকে পরিবর্তনের আওতায় আনার চেষ্টা করতে থাকেন। কিছুদিন পর ঐতিহ্যবাহী সিদ্দিকীয়া দাখিল (তৎকালিন)মাদ্রাসার সুপার তারই বড়ভাই মরহুম আহমাদ উল্লাহ ইন্তেকাল করেন। ১৯৮৭ সালে কয়রার ছোট হুজুরের তখন দায়িত্ব পড়ে এ সম্রাজ্যের হাল ধরার। মাদ্রাসার সুপার হিসেবে শুরু করেন কর্ম জীবন। মাদ্রাসাকে আলিম,ফাজিল,কামিলের আওতায় নিয়ে আসেন। এভাবে দীর্ঘ ৩৭বছর ওই মাদ্রাসার খেদমত করেন। হাজারো ছাত্রকে আদর, শাসন দিয়ে সুশিক্ষা দিয়েছেন এই নূর মুহাম্মাদ। কে জানতো কাঠের অবৈধ ব্যায়সায়ী হয়ে উঠবে যুগের মুয়াজ্জিন। প্রজন্মের আদর্শ হয়ে চীরচেনা হয়ে থাকবে নূর মুহাম্মাদ। কখনো ভুলবেনা প্রিয় মানুষটাকে। এমন নূর মুহাম্মাদ পৃথিবীতে মানুষের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবে।
Nbtv.