~হাফিজুর রহমান, আসোসিয়েট এডিটর, এনবিটিভি
কদিন আগে ভারত জোড়ো পদযাত্রার মাঝে রাহুল গান্ধী কর্নাটক সরকারকে 40% এর সরকার বলে অভিযোগ করেছিলেন। এত তাড়াতাড়ি সেটার উদাহরণ দেখতে পাবো ভাবিনি। ১১ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠান ছিল কর্নাটক এয়ারপোর্টের কাছে। প্রভাবশালী ভক্কালিংগ সম্প্রদায়ের নেতা কেম্পেগোড়ার ব্রোঞ্জের মুর্তি উদ্বোধন করতে আগমন দেশের প্রধানমন্ত্রীর। এ অবধি গল্প ঠিক ছিল, গোল বাধল অনুষ্ঠান শেষ করে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর। একদল বিক্ষুদ্ধ শ্রমিক হই হল্লা বাঁধিয়ে দিল। তাদের অভিযোগ সভায় ভিড় বাড়াতে তাদের ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলে আনা হয়েছে, অথচ সভা শেষে ১০০ টাকা দিচ্ছে। যাদের কোনও উপায় নেই তারা টাকা নিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে চলে গেছে। যায়নি ৪০ জন বেয়াড়া শ্রমিক, তারা রাস্তা অবরোধ করেছে। এয়ারপোর্টের মত যায়গায় অবরোধের ফলে পুলিশকে বাধ্য হয়েই শ্রমিকদের কেস নিতে হয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতার নামে। ব্যাপারটি ধামা চাপা পড়ে যেত, কারণ শাসক দলের পা চাটা গদি মিডিয়া এটা প্রচার করতনা। মুস্কিল করে দিলো নিউজ মিনিট, গোঁয়ার এক চ্যানেল।। তারা খবরটি লিক করে হাটের মাঝে party with difference এর হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছে। এতে আর কি হবে, শাসক দলের এজেন্সি লোক দেখানো চোর পুলিশ খেলে অপরাধীকে ক্লিন চিট দেবে, যেমনটা দিয়েছিল মন্ত্রী ঈশ্বরাপ্পার বেলায়। বিজেপি সমর্থক এক ঠিকেদার বড়ো কাজ পেয়ে খুশি হয়ে নিজের সর্বস্ব লাগিয়ে নেমে পড়েছিল। বেচারা ভেবেছিলো দল পাশে আছে উন্নতি হবেই, মনে মনে স্বপ্ন দেখছিল কিন্তু স্বপ্ন ভঙ্গ হতে সময় লাগেনি। সর্বস্ব লাগিয়ে বড় কাজ ধরা সন্তোষ পাতিল মন্ত্রীকে দাবি মত ঘুষ দিতে না পারার অপরাধে দিনের পর দিন শোনে অকথ্য গালি গালাজ । সহ্যের সীমা পার হওয়ার পর সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। মৃত্যুর পর তার লেখা শেষ চিঠিতে ছিল সেই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগ। এরপর কি হলো! এরপর সরকারি এজেন্সি দায়িত্ত্ব নিয়ে মন্ত্রীকে নির্দোষ ঘোষণা করলো। আসলে বিসর্জনের পর মূর্তির সাজ সজ্জা ওঠা কাঠামোর মত কেন্দ্রীয় শাসক দলের দাঁত নখ বেরিয়ে পড়েছে। মরিয়া হয়ে ক্ষমতার মধুভান্ড আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় দুহাতে লাড্ডু সরকার। এরই বহিঃপ্রকাশ টাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোক আনা।
দেশ জুড়ে মন কি ভাটের সরকার ন্যাংটা হয়ে গেছে। মন কি ভাট শুনতে কেউ আসেনা। খালি মাঠে ভাষণ শোনার লোক নেই , সারি সারি চেয়ার বিদ্রুপ করছে। তাই মরিয়া হয়ে লোক ভাড়া করে মুখ রক্ষার অপচেষ্টা। লোকে বেয়াড়া প্রশ্ন শুরু করেছে। প্রচার করতে এলে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করছে।
এই বিপদ থেকে উদ্ধারের রাস্তা হলো বহু পরীক্ষিত হিন্দু মুসলিম বিরোধ। হঠাৎ কর্ণাটকের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। রীতিমত টাকা দিয়ে পাগড়ি পরা ছেলে-পিলেদের ছেড়ে দেওয়া হলো হিজাব বিরোধী আন্দোলনে। দুটি প্রাণ গেলো এর ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মরলো। লোকের নজর ঘুরিয়ে বিক্ষোভে জল ঢালা হলো আবার মেজরিটি ভোট ব্যাংক ও ঠিক থাকলো।
২৪ এর দেরি নেই। গোটা দেশ তিতিবিরক্ত। এই বিক্ষোভ থামাবার কোনও ওষুধ নেই কেন্দ্রীয় দলের। ভুল বললাম আছে। আদি অকৃত্তিম tried and tested formula হিন্দু মুসলিম কার্ড।