রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা:আক্রান্ত ৫৯, মৃত্যু ৬

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

received_712168766241126

খোরশেদ মাহমুদ

স্টাফ রিপোর্টার, এনবিটিভিনিউজ।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। ৩৪টি ক্যাম্পে এসব রোহিঙ্গার বসবাস। শরণার্থী ক্যাম্পে করোনার প্রাদুর্ভাব অনেক আগেই শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ জন রোহিঙ্গা। আর করোনায় মারা গেছেন ৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ জন। এ তথ্য জানান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুবুর রহমান তালুকদার। তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য রয়েছে ১৫টি বড় ফিল্ড হাসপাতাল এবং ১২০টি হেলথ পয়েন্ট।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচার নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। মানবিক কারণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব রোহিঙ্গাকে টেকনাফ ও উখিয়ার ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয়ে ব্যবস্থা করেন। এর পর থেকে রোহিঙ্গারা এসব ক্যাম্পে বসবাস করে আসছে। বিশ্বে মহামারী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এসব ক্যাম্পে যাতে এর প্রভাব না পড়ে, সে জন্য শুরু থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার। তিনি বলেন, করোনা মহামারী প্রতিরোধে রোহিঙ্গাদের ৩৪টি ক্যাম্প লকডাউন করা হয়। এর পর থেকে সেখানে কোভিড-১৯ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিতে কাজ শুরু করা হয়।

advertisement
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা জানান, সর্বশেষ উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর শরণার্থী ক্যাম্পের ব্লক সি ৭-এর বাসিন্দা ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ রোহিঙ্গা গত ১২ জুলাই জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের আইওএম পরিচালিত আইসোলেটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের পিপিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ১৩ জুলাই তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ১৪ জুলাই বিকালে তিনি মারা যান। এই কর্মকর্তা আরও জানান, এই বৃদ্ধসহ উখিয়া ও টেকনাফ শরণার্থী ক্যাম্পে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৬ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তাদের সবার বয়স ৬০ বছরের ওপরে। করোনায় প্রথম রোহিঙ্গা মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ৩০ মে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার (জুলাই) শামসুদ্দোজা নয়ন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আইসোলেশন সেন্টারে ৪০০ বেড প্রস্তুত রাখা আছে। আরও ৫০০ আইসোলেশন বেড প্রস্তুতির কাজ চলছে।

advertisement
কুতুপালং চার নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ শাহেদ, আজগর আলী ও মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা এখানে খুব ভালো আছি। তবে আমরা চাই ক্যাম্পের মধ্যে যেন বাইরে থেকে কোনো লোক না আসে। তা হলে আমরা আরও নিরাপদ থাকতে পারব।

টেকনাফের নয়াপাড়া লেদা ক্যাম্পের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, মিয়ানমারে কোনোদিন আমরা ওষুধ দেখতে পাইনি। এখানে এসে অসুখ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ পাচ্ছি। এ জন্য শুকরিয়া আদায় করছি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। বাংলাদেশের জন্য দোয়া করছি আমরা সব সময়।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোহিঙ্গাসহ ৩০৮৩ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৬ রোহিঙ্গাসহ ৪৯ জনের। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৯০০-রও বেশি।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর