লালগোলা ব্লকের রামনগর থেকে সাহাবাদ পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশার পরিবর্তনের দাবী

নীচের ছবিতে যে রাস্তাটি দেখছেন, এটি হলো মধ্যে রামনগর থেকে সাহাবাদ হয়ে লালগোলা হাইওয়ে ও লালগোলা বাজার যাওয়ার অন্যতম রাস্তা । এই রাস্তা বেয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ জন ,শত শত ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন কর্মসুত্রে বিভিন্ন জায়গায় ও স্কুল ,কলেজে যাতায়াত করে । আটরশিয়া , তারানগর, মধ্যে রামনগর , শিরোরামনগর ,দুর্লভপুর ,রানীনগর, ও রাধাকৃষ্নপুর সহ বিস্তীর্ন এলাকার যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই রাস্তাটি । এছাড়া এই রাস্তাটির বুকে ভর দিয়ে ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষজন বিলবোরাকোপরা অঞ্চল , বিলবোরাকোপরা সরকারি হোমিও কেন্দ্র ও বিলবোরাকোপরা শাখা ব্যাঙ্কে প্রতিদিন ছুটে আসে।এছাড়াও অনেক ভ্রমনপিপাসু মানুষ বিকালবেলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এই রাস্তা বেয়ে ছুটে যায় পদ্মা নদীর ধারে ।কিন্তু বড় দুঃখের বা পরিতাপের বিষয় হল এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে । এই রাস্তাটি বরাবরই যেন অবহেলার শিকার । এই রাস্তাটি অতীতের কাঁদা মাটির গ্লানি দূর করে প্রথম ১৯৯৮ সালে পিচ করা হয় কিন্তু সেই বছরই ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে রাস্তাটি আবার বেহাল অবস্থায় ফিরে আসে । এইভাবে চলতে থাকে দীর্ঘদিন ,স্থানীয় পঞ্চায়েতে কখনও ডান তো কখনও বাম এভাবে ক্ষমতার রদবদল হলেও রাস্তার হাল কিন্তু আর ফিরে আসেনা । পরবর্তীতে অনেক যন্ত্রনা উপভোগ করার পর আবার মানুষের মুখে হাসি ফোটে ২০১০-১১ সালে দীর্ঘ ১৩ বছর যন্ত্রনা ভোগের পর আবার রাস্তার কাজ শুরু হয় । বহু টালবাহনার মধ্যে দিয়ে রাস্তাটি পুনরায় মেরামত হলেও রাস্তার গুনগত মান এক্কেবারে ভালো ছিলনা । ফলস্বরুপ রাস্তায় প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত মালবাহী লরি ,পাথরের গাড়ী সহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দশ চাকা- বারো চাকার গাড়ী চলাচলের ফলে বছর খানেক ঘুরতে না ঘুরতেই রাস্তা আবার আগের জায়গায় ফিরে যেতে থাকে । শুরু হয় আবারও মানুষের ভোগান্তি এবং এবার ভোগান্তির সীমা চরমে পৌঁছেছে । কারন রাস্তার দু পাশে সরু গভীর নালা ও গর্ত থাকার কারনে রাস্তায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওভারলোড গাড়ী চলাচলের ফলে রাস্তার বিভিন্ন জায়গা বসে গেছে এবং বিভিন্ন স্থানে ভয়ংকর ভাবে ধস নেমেছে । এছাড়াও রাস্তার বুক বিদীর্ন করে বেরিয়ে আছে পাথর ,যারা উঁচু দাঁত বের করে পথিককুলকে উপহাস করছে ।

গতবছর অতিবৃষ্টি হওয়ার ফলে রাস্তার মাঝে মাঝে যে গাডোয়াল বা সাঁকো গুলো ছিল সেগুলো ধস নেমে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে । কিন্তু দুঃখের কথা হল সেগুলো মেরামত না করে স্থানীয় প্রসাশন “শাঁক দিয়ে মাছ ঢাকার মত করে” কোন প্রকারে যাতায়াতের মতো ব্যবস্থা করে বন্ধ করে দিয়েছে । কিন্তু এই রাস্তাটিকে টিকিয়ে রাখতে এই সাঁকোগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম । কারন যখন গ্রীস্মের দাবদহে তাপে কলকলির বুক রুক্ষ , শুস্ক জলের জন্য হাই পিত্যেষ করতো তখন কলকলির বুকছাপিয়ে বর্ষার আগমনে ,পদ্মা নদীর জল এসে প্লাবিত করতো কলকলি সহ এইসব নালা ,গর্ত ও রাস্তার পাশের বিস্তীর্ন মাঠ।তখন রাস্তাটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ও চলাচলের অবস্থা বজায় রাখার জন্য এই সাঁকোগুলো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা গ্রহন করতো । বিগত কয়েক বছর ধরে বন্যা ও বৃষ্টির বাড়বাড়ন্ত না থাকায় সাঁকোগুলো সেভাবে ব্যবহৃত না হলেও , ভবিষ্যেতে যে প্রয়োজন পড়বে , এটা নিশ্চিত । তাই সাঁকোগুলো বিপদ ঘনিয়ে আসার আগে মেরামত না করলে কিছুদিন পরেই বর্ষা নামবে তখন কিন্তু ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আছে।
বর্তমানে রাজ্যে ক্ষমতাসীন সরকার পথশ্রী অভিযানের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন রাস্তা পুনরায় মেরামত ও নতুন রাস্তা গড়ে তুললেও এই রাস্তাটির ভাগ্যের শিঁকে এখন পর্যন্ত ছিঁড়েনি । তাই সাধারন মানুষের সমস্যার কথা ভেবে ক্ষমতাসীন সরকারের স্থানীয় নেতৃত্ববৃন্দ, পঞ্চায়েত প্রধানের পাশাপাশি লালগোলা ব্লক আধিকারিকের(B.D.O) দৃষ্টি আকর্ষন করে অনুরোধ করবো আগামী বর্ষা নামার আগে অতিদ্রুত রাস্তাটি মেরামত করার জন্য ।

কলমে শরীয়তুল্লাহ সোহন

Latest articles

Related articles