বাঁশখালীতে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবের পাবলিসিটির মাইকের আওয়াজে অতিষ্ট এলাকাবাসী

 

আলমগীর ইসলামাবাদী
চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

বাঁশখালীতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবদি চলছে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাবসহ ডাক্তারদের সিরিয়াল নিতে পাবলিসিটি ও মাইকিং। প্রতিদিন উপজেলা ও পৌর সদরসহ বাঁশখালীর সর্বত্রে এই মাইকিং পাবলিসিটির যন্ত্রনায় সাধারণ মানুষ অতিষ্ট। বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক বেড়ে যাওয়ায় রোগী ধরতেই মুলত; হাসপাতাল ও ল্যাবগুলো এমন যন্ত্রনাদায়ক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। খোদ অফিস পাড়া খ্যাত বাঁশখালী উপজেলা সদরেও এসব মাইকিং রাত দিন চললেও দেখার কেউ নেই। মাইকিংয়ের উচ্চ আওয়াজে সবচেয়ে বেশী সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে রোগী এবং অফিসে কর্মরত ও সেবা গ্রহিতারা।

জানা গেছে, বাঁশখালীতে ১৯ টি বেসরকারী হাসপাতাল, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, ল্যাব ও ক্লিনিকের সরকারী অনুমোদন ও পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। নেই যথাযথ কাগজপত্র। একমাত্র জলদী আধুনিক হসপিটাল ছাড়া অন্যকোন হাসপাতালের স্থায়ী ভবনও নেই। ৩, ৪ বছর মেয়াদী ভাড়া চুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত এসব হাসপাতাল ও ল্যাব-ক্লিনিকের আবার শেয়ার হোল্ডারও কয়েকশত। প্রথমে ১০০ জন শেয়ার নেয়ার কথা বলে তারা শেয়ার প্রতি এক লাখ টাকা করে নিলেও পরে কোন কোন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের শেয়ার সংখ্যা ঠিক কত তাও জানেনা খোদ শেয়ার হোল্ডাররাও। আবার এসব হাসপাতালে শেয়ার হোল্ডারদের মাঝে বিভিন্ন সময়ে টাকা পয়সা নিয়ে দেন দরবার ও মারামারীর ঘটনাও ঘটেছে সম্প্রতি। তবুও নতুন নতুন হাসপাতাল ও ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা যেন থামছেনা। নতুন নতুন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাব প্রতিষ্ঠার পরই শুরু হয় প্রচারনা, পাবলিসিটি এবং মাইকিং। এসব মাইকিং পাবলিসিটির যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ এখন বাঁশখালীর মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেঙের ছাতার মত যত্রতত্র সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারী মেডিকেলের কয়েক গজের মধ্যেই গড়ে উঠেছে কয়েকটি বেসরকারী মেডিকেল ল্যাব ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্টানে নেই কোন উন্নতমানের রোগ নিরুপনের যন্ত্রপাতি, নেই সরকারী ট্রেনিং প্রাপ্ত টেকনেশিয়ান। এর পরেও পানের বাটার মত প্রতিষ্ঠান খোলে তাদের কর্মচারীদের দিয়েই ইচ্ছেমত রিপোর্ট সরবরাহ করে উপকুলীয় গ্রাম গন্জ থেকে আসা অসহায় গরীব রুগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে কিছু দিন পুর্বে এসব হাসপাতাল ও ল্যাব ক্লিনিকে অভিযান চালায়। সে সময় কাগজপত্র না পেয়ে বেশ কিছু ল্যাব ক্লিনিককে জরিমানা এবং সতর্ক করেন। এসময় বাঁশখালীর ১৯টি ল্যাব, ক্লিনিক ও হাসপাতাল যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের কোন কাগজপত্র পরিদর্শন টিমকে দেখাতে পারেনি। এসময় পরিদর্শন টিম হাসপাতালগুলোকে এক সপ্তাহের মধ্যে টিএইচও বরাবরে অনুমোদনের কাগজপত্র জমা দিতে বলা হলেও এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের কোন কাগজপত্র জমা দিতে পারেনি। এর পরও থেমে নেই তাদের অবৈধ হয়রানী মুলক কার্যক্রম ও বেসরকারী মেডিকেলের নিত্য নতুন আত্মপ্রকাশ। অনেক হাসপাতাল রোগীদের সেবা দেয়ার পরিবর্তে গলাকাটা ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে। গ্রামের সহজ সরল লোকগুলোকে ভয়ভীতি দেখিয়েও টাকা আদায়ের অভিযোগ আছে অনেকের বিরুদ্ধে। সামান্য জ্বর সর্দিতেও হাসপাতালে ভর্তি রেখে হাজার হাজার টাকা কেবিন ভাড়ার নামে গলাকাটা বিল তোলার ঘটনাও ঘটছে এসব বেসরকারী হাসপাতাল গুলোতে। এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য প্রশাসনকে যথাযথ তদারকি ও ব্যবস্থা গ্রহন করতে এলাকাবাসী দাবী জানিয়েছে।

Latest articles

Related articles