নিউজ ডেস্ক : গোদী মিডিয়ায় পাকিস্তানি, দেশদ্রোহী, ইত্যাদি নামগুলো শুধুমাত্র মুসলিম এবং মুসলিমদের জন্য আওয়াজ তোলা ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহার করা হয়। তুলে ধরা হয় সেই সব ঘটনা যেগুলোর সাহায্যে মুসলিম সমাজকে কলঙ্কিত করে অপরাধী রূপে চিত্রিত করা যায়। কিন্তু মানবতার সেবায় মুসলিমদের অক্লান্ত পরিশ্রম কখনো এই মিডিয়াগুলো তুলে ধরে না। তবে মিডিয়ার পক্ষপাতিত্বের এই যুগেও নিরবে মানবতার সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন বহু মানবতা প্রেমি মুসলমান। এমনই একজনের নাম জাভেদ খান।
দিল্লির বাসিন্দা জাভেদ খান পেশায় একজন দরিদ্র অটোচালক। ভারতে করোনা ভাইরাস এর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর রাজধানী দিল্লির অবস্থা দেশের অন্যান্য সব শহরের তুলনায় অনেক বেশি উদ্বেগজনক। হাসপাতালে রোগী নেই, নেই বেড। বেড থাকলে অক্সিজেন নেই অক্সিজেন, অক্সিজেন পেলে করোনা চিকিৎসার উপযুক্ত ওষুধ নেই। তার থেকে আরো বড় সমস্যা করোনা রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সংকট। সাধারণ মানুষের এই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা দেখে মনে মনে নিজের পরিবারের কথা বাদ দিয়ে এ বিশ্বকে নিজের পরিবার বানিয়ে ফেলে তার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন জাভেদ খান।
নিজের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় অটোকে একটা অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে ফেলেন। বিনা পয়সায় করোনা আক্রান্ত রোগীদেরকে তিনি তাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যান দিল্লির হাসপাতালগুলোতে। তার নাম্বার ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ফলে দিনের মধ্যে বহু ফোন আসতে থাকে জাভেদের কাছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিবহনের সময় প্রয়োজন হয় অক্সিজেনের। কিন্তু নিজের পকেট থেকে অটোর গ্যাসের খরচ জোগাড় করা জাভেদের কাছে তো অক্সিজেন সিলিন্ডার ভর্তি করার মতো অর্থ নেই। তাই অক্সিজেন সিলিন্ডার ভরার জন্য তিনি বিক্রি করে দেন নিজের স্ত্রীর সব গহনা। তারপরে তিনি প্রতিদিন নিয়মিত লাইনে দাঁড়িয়ে অক্সিজেন ভর্তি করে সারাদিন করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিবহনের কাজ করে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে জাভেদের মানবতা প্রেমের এই অবিস্মরণীয় কীর্তি জানাজানি হওয়ার পর সবাই তাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন।